ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকায় ১৪২ শতাংশ বেশি বৃষ্টি, এ মাসে ঘূর্ণিঝড়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৭
ঢাকায় ১৪২ শতাংশ বেশি বৃষ্টি, এ মাসে ঘূর্ণিঝড়

ঢাকা: বিরূপ আবহাওয়ায় বর্ষা পেরিয়ে গেলেও হেমন্তকালের মধ্যে ইংরেজি অক্টোবরে সারাদেশে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ মাসে কেবল ঢাকায়ই স্বাভাবিকের তুলনায় ১৪২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। চলতি মাসেও বিরূপ আবহাওয়ার ফল দেখা দিতে পারে। এ মাসে এক-দু’টি নিম্নচাপ থেকে একটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কাও করছে আবহাওয়া অধিদফতর।

আবহাওয়ার দীর্ঘ মেয়াদী পূর্বাভাস প্রদানের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটির নিয়মিত বৈঠকে এসব তথ্য জানিয়ে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১ নভেম্বর) বিকেলে আগারগাঁওয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে অক্টোবরে সংঘটিত আবহাওয়ার বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করা হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ।
 
পর্যালোচনাকালে দেখা যায়, অক্টোবর মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৭৬ শতাংশ বেশি। ৮ অক্টোবর উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। এটি লঘুচাপ থেকে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে পরবর্তীতে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও লঘুচাপে পরিণত হয় এবং পরিশেষে মৌসুমী অক্ষের সঙ্গে মিলিত হয়। এ সময় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়।
 
এছাড়া গত ১৫ অক্টোবর মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় আরও একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। এটি পরদিন সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। এরপর নিম্নচাপ থেকে স্থল নিম্নচাপ এবং দুর্বল হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং পরবতীর্তে লঘুচাপে পরিণত হয়। এ স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের অনেক স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়।
 
ঢাকায় স্বাভাবিক মাত্রা ১৫৯ মিলিমিটারের স্থলে ১৪২ শতাংশ বেশি অর্থাৎ ৩৮৫.৩ মিলিমিটার, ময়মনসিংহে ১৯১ মিলিমিটারের স্থলে ২২৮.৫ মিলি, চট্টগ্রামে ১৮৬ মিলিমিটারের স্থলে ২৫৮.৪ মিলি, সিলেটে ১৮৭ মিলিমিটারের স্থলে ৩২২.৫ মিলি, রাজশাহীতে ১১৩ মিলিমিটারের স্থলে ২৩৪.২ মিলি, রংপুরে ১৩৪ মিলিমিটারের স্থলে ১৬১.৫ মিলি, খুলনায় ১২০ মিলিমিটারের স্থলে ২৯৫.৫ মিলি, বরিশালে ১৭৬ মিলিমিটারের স্থলে ৩৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
 
আর সারাদেশে স্বাভাবিক ১৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা থাকলেও হয়েছে ২৭৬ মিলি, অর্থাৎ ৭৬.২ শতাংশ বেশি। স্বাভাবিক ১১ দিনের স্থলে বৃষ্টিপাতের দিন সংখ্যা ২৯ দিন।  

অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ঢাকার অধিকাংশ জায়গা কোমর পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে অবর্ণনীয় কষ্টে দিন যাপন করে রাজধানীবাসী।
 
প্রাপ্ত আবহাওয়া উপাত্ত, উর্দ্ধাকাশের আবহাওয়া বিন্যাস, বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের বিশ্লেষিত আবহাওয়া মানচিত্র, জলবায়ু মডেল এবং এল নিনো/লা নিনা’র অবস্থা যথাযথ বিশ্লেষণ করে কমিটি নভেম্বরের পূর্বাভাস দিয়েছে।
 
পূর্বাভাস অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে (৫-৮ দিন)। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক-দু’টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যারমধ্যে অন্তত ১টি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। নভেম্বর মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে। তবে এ মাসে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে।  
 
এ মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকায় ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা/মাঝারী ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের প্রধান নদ-নদী সমূহে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থাকবে এ মাসে।
 
কৃষি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে দেশের দৈনিক গড় বাষ্পীভবন ২.৭৫-৩.৭৫ মি.মি. এবং দৈনিক গড় সূর্য কিরণকাল ৫.০০-৬.৫০ ঘণ্টা থাকতে পারে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৭/আপডেট ১১২৪ ঘণ্টা
এমআইএইচ/আরআইএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।