পল্লী বিদ্যুতের কিছু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত অসাধু কর্মকর্তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে নানা কৌশলে ওই টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা।
মানিকগঞ্জের মূলজান পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জেলার সাটুরিয়া উপজেলার ৮০ কিলোমিটার এলাকা নতুনভাবে বিদ্যুতায়ন করা হচ্ছে।
এ সমস্ত খুঁটি বসানোর যাবতীয় খরচাদি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাঝে বণ্টনও করে দেওয়া হয়েছে। সাটুরিয়া উপজেলার ৮০ কিলোমিটার প্রায় ১৮’শ খুঁটি বসানোর কাজও প্রায় শেষের দিকে।
সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের কাজীপাড়া কৈট্টা এলাকার গ্রাহক হারেজ মিয়া ও জসিম হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বিদ্যুতায়নের জন্যে একই এলাকার নুর ইসলাম ও সধু মিয়ার মাধ্যমে গ্রাহকপ্রতি ছয় থেকে আট হাজার টাকা করে উত্তোলন করে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে নুর ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি জানান, টাকাটা তিনি নিজের জন্য আদায় করেননি। উত্তোলন করা টাকা ঠিকাদার সফিক হোসেনকে দেওয়ার জন্যে তিনি আক্কাছ নামের এক ব্যক্তির হাতে তুলে দিয়েছেন।
কিন্তু এ ধরনের কোনো টাকা পয়সা লেনদেনের অভিযোগের সত্যতা বেমালুম অস্বীকার করেন আক্কাছ মিয়া।
একই উপজেলার চরধানকোড়া এলাকার এক গ্রাহক নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, পল্লী বিদ্যুতের ১৪টি খুঁটি বসানোর জন্য ঠিকাদার সফিককে প্রথমে ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। পরে আবার গ্রাহকপ্রতি আরও ছয় হাজার টাকা করে নিচ্ছেন ঠিকাদার সফিক।
পার্শ্ববর্তী উত্তর খল্লী এলাকার গ্রাহক সেলিনা আক্তার অভিযোগ করেন, তার বাড়িতে একটি খুঁটি বসানোর জন্য ঠিকাদার আব্দুস সোবহান তার কাছে চার হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু টাকা না দেওয়ার কারণে এখনো তাকে খুঁটি দেওয়া হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধানকোড়ার দোতরা এলাকার আরো এক গ্রাহক জানান, একটি খুঁটি দেওয়ার জন্যে ঠিকাদার মিজানুর রহমান তার কাছ থেকে চার হাজার টাকা নিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে মিজানুরের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ইউনিক ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সফিক হোসেন ও সোবহান এন্টার প্রাইজের ঠিকাদার সোবহান গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন।
মানিকগঞ্জ মূলজান পল্লী বিদ্যুতের (আরইবি প্রজেক্টের) অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার নূর মোহাম্মদ জানান, গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো টাকা পয়সা আদায়ের সুযোগ পল্লী বিদ্যুতের কোনো ঠিকাদারের নেই। যদি কোনো ঠিকাদার টাকা লেনদেনের সাথে জড়িত থেকে থাকেন, তাহলে তদন্ত করে অবশ্যই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মানিকগঞ্জ মূলজান পল্লী বিদ্যুতের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. ওবায়দুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, শতভাগ বিদ্যুতের এই প্রকল্পে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ বা এক্তিয়ার কারো নেই। তবে ঠিকাদাররা অনেক সময় দালালদের মাধ্যমে বাড়তি টাকা পয়সা আদায় করে থাকে এটাও সত্য।
এ বিষয়ে সাধারণ গ্রাহকদেরকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৭
জেএম