ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বড়দিনে তেজগাঁও চার্চে হাজার মানুষের মিলনমেলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৭
বড়দিনে তেজগাঁও চার্চে হাজার মানুষের মিলনমেলা তেজগাঁও হোলি রোজারিও চার্চ প্রাঙ্গণে ভক্ত-অনুসারীদের ঢল। ছবি: কাশেম হারুন

ঢাকা: খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশু’র জন্মদিন ক্রিস্টমাস ডে বা বড়দিনে হাজার মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল রাজধানীর তেজগাঁও হোলি রোজারিও চার্চ। 

সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে তেজগাঁও চার্চে গিয়ে দেখা যায় যিশু’র ভক্ত-অনুসারীদের ঢল। চার্চের ভেতরে চলছিল আরাধনা।

সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে এই আরাধনা। কিছু সময় বিরতি দিয়ে চারবার একই রকমের যজ্ঞানুষ্ঠান চলে। এসময় ভক্তদের উদ্দেশ্যে যিশু’র বাণী তুলে ধরেন আর্চ বিশপ প্যাট্রিক ডি রোজারিও।

সকাল ৭টার আয়োজনের (প্রথম পাঠ) বাণী শোনান এসএমআর এ সিস্টারস। দ্বিতীয় পাঠ শোনান পলিন ফ্রান্সিস গোমেজ এবং তৃতীয় পাঠ শোনান এমসি সিস্টারস। এসময় সার্বজনীন প্রার্থনা করা হয়।

৯টায় প্রথম পাঠ, দ্বিতীয় পাঠ ও সার্বজনীন প্রার্থনা পরিচালনা করেন যথাক্রমে রীতু পিরিচ, রোমিও ব্লেইক ও জ্যোৎসনা গমেজ। এই প্রার্থনায় অংশ নেন সহস্রাধিক ভক্ত।

খ্রিস্টধর্মের নিয়মে এই যজ্ঞানুষ্ঠানে যিশু’র বাণী প্রচারের আহ্বান জানানো হয়। প্রার্থনা করা হয় সারা পৃথিবীর মানুষের মঙ্গল কামনায়।  খ্রিস্টধর্ম মতে, ২০১৭ বছর আগে বেথলেহেমের এক গোয়ালঘরে আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন যিশু।  ছবি: কাশেম হারুনআয়োজকরা জানান, যিশু’র আদর্শে জীবন যাপন করে পৃথিবীতে শান্তি আনাই যজ্ঞানুষ্ঠানের লক্ষ্য।  

এ বিষয়ে সিস্টার তারা বাংলানিউজকে বলেন, আজ আমাদের সবার খুশির দিন। আজ যিশু’র জন্মদিন। শুধু খ্রিস্টানদের জন্য নয়, মানবজাতির জন্যই যিশু কুমারী মায়ের গর্ভে মানবধর্ম ধারণ করে এসেছিলেন। যিশু পরিত্রাতা, ত্রাণকর্তা। এই দিনে আমরা মানবজাতির শান্তি ও কল্যাণ কামনা করছি। যিশু’র বাণী সারা পৃথিবীতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়েছি।

৮০ বছর বয়সী এই ব্রতধারিনী আরও বলেন, যিশু যেমন তার জীবন দিয়ে অন্যায়-অত্যাচার, শোষণ থেকে মানুষকে মুক্ত করেছিলেন, যেভাবে মানুষের সব শোক-দুঃখের ভার গ্রহণের জন্য আত্মত্যাগ করেছিলেন, তেমনই মানুষের মধ্যে মুক্তি ও ত্যাগের চেতনা ছড়িয়ে পড়ুক—এই প্রত্যাশা করি। যিশুর সংযম, সহিষ্ণুতা ও ভালোবাসার শিক্ষা হোক সবার পাথেয়। বড়দিন প্রত্যেক মানুষকে শান্তি, প্রেম ও সম্প্রীতির শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করুক। পৃথিবী থেকে দূর হোক হিংসা ও অশান্তি।

যজ্ঞানুষ্ঠান শেষে অনেককে চার্চের পাশেই সমাধিস্থলে গিয়ে প্রয়াত প্রিয়জনদের জন্য প্রার্থনা করতে দেখা যায়। অনেকে ফুল দিয়ে, আবার কেউ কেউ মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রিয়জনদের স্মরণ করেন। অনেকে সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে বাবা মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রিয়জনদের স্মরণ করেন।  ছবি: কাশেম হারুনপ্রার্থনা শেষে ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছোঁয়ার আগেই ভক্তরা চার্চ ছেড়ে চলে যেতে থাকেন। ১২টা বাজার পরই চার্চের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর আর কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।     

খ্রিস্টধর্ম মতে, ২০১৭ বছর আগে জেরুজালেমের দক্ষিণে বেথলেহেম নগরীর এক গোয়ালঘরে আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন যিশু। সেজন্য প্রতিবছর ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন পালন করে থাকেন খ্রিস্টধর্মের অনুসারীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৭
এমএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।