ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

৩৯ জনকে দেওয়া হলো শিশু সাহিত্য পুরস্কার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২১ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৮
৩৯ জনকে দেওয়া হলো শিশু সাহিত্য পুরস্কার অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমি শিশু সাহিত্য পুরস্কার বিতরণ/

ঢাকা: সাত বিভাগে ৩৯ জন শিশু সাহিত্যিক পেলেন ‘অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমি শিশু সাহিত্য পুরস্কার ১৪১৮-১৪২৩’। গত ছয় বছরের পুরস্কার একসঙ্গে দেওয়া হয়েছে। 

শনিবার (১০ মার্চ) দুপুরে শিশু একাডেমি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।

শিশু একাডেমির পরিচালক আনজীর লিটন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ১৯৮১ সালে অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তিত হয়। ২০০৭ থেকে এটি ‘অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার’ নামে দেয়া হতো। ২০০৮ সাল থেকে এর নাম করা হয় ‘অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার’।

বাংলা বছর অনুযায়ী প্রকাশিত বইয়ের ওপর ভিত্তি করে এই পুরস্কারের আয়োজন করা হয়। প্রতি বছর ৭টি শাখায় পুরস্কার দেয়া হয়।

কবিতা-ছড়া-গান, গল্প-উপন্যাস-রূপকথা, অনুবাদ-ভ্রমণকাহিনী, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য জীবনী প্রবন্ধ, স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, নাটক ও বই অলংকরণ।  

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার নিজের জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, আমার বয়স যখন ১০ বছর, তখন আমি বই লিখে স্কুল থেকে পুরস্কার পেয়েছিলাম। সেটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। পরবর্তীতে জীবনে আমি এটা থেকে বেশ অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম।
  
উপস্থিত শিশুদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, তোমরা এখনই ঠিক করে নেবে বড় হয়ে তুমি কি হতে চাও। এ কাজে তোমরা শিক্ষক, অভিভাবক ও সহপাঠীদের সহায়তা নেবে। এখনই যদি তোমরা এটা ঠিক করতে পারো তাহলে অবশ্যই সফল হবে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের সরকারের সবচেয়ে বড় সফলতার মধ্যে একটি হলো এখন সব শিশু স্কুলে যায়। ঝরে পড়ার হারও কমেছে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সবার আগে পরিবারকে সচেতন হতে হবে। প্রত্যেক ঘরে ঘরে গিয়ে সরকারের পক্ষে শিশু নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব না।
 
এই পুরস্কার প্রবর্তনের পর থেকে উল্লেখযোগ্য পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের মধ্যে রয়েছেন শওকত ওসমান, শামসুর রাহমান, ফয়েজ আহমদ, আল মাহমুদ, সুকুমার বড়ুয়া, আব্দুল্লাহ আল-মুতী, হাসান আজিজুল হক, হুমায়ূন আহমেদ, সেলিনা হোসেন, কাইয়ুম চৌধুরী, হাশেম খান, রফিকুন নবী প্রমুখ।

পুরস্কার হিসেবে অর্থ, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। প্রথমদিকে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখককে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হতো। পরবর্তীতে পুরস্কারের অর্থমান বৃদ্ধি করে ১০ হাজার টাকা ও সর্বশেষ ১৪১৭ বঙ্গাব্দ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেয়া হয়।

নানা কারণে গত ৬ বছর এই পুরস্কার দেওয়া বন্ধ ছিল। এ বছর এক সঙ্গে গত ৬ বছরের পুরস্কার দেওয়া হলো।

১৪১৮ বঙ্গাব্দে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন কবিতা-ছড়া-গানে রাশেদ রউফ ও খালেদ হোসাইন, গল্প-উপন্যাস-রূপকথায় মোহিত কামাল, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য জীবনী প্রবন্ধে কাজী কেয়া, স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে তপন চক্রবর্তী এবং বই অলংকরণে নাসিম আহমেদ।

১৪১৯ বঙ্গাব্দে কবিতা-ছড়া-গানে হাসনাত আমজাদ, গল্প-উপন্যাস-রূপকথা দন্ত্যস রওশন, স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে শেখ আনোয়ার, নাটকে হানিফ খান এবং বই অলংকরণে মনিরুজ্জামান পলাশ।

১৪২০ বঙ্গাব্দে কবিতা-ছড়া-গানে আখতার হুসেন, গল্প-উপন্যাস-রূপকথায় দীপু মাহমুদ, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য জীবনী প্রবন্ধে সোহেল আমিন বাবু, অনুবাদ-ভ্রমণকাহিনিতে ফারুক হোসেন, নাটকে আ শ ম বাবর আলী এবং বই অলংকরণে বিপ্লব চক্রবর্তী।

১৪২১ বঙ্গাব্দে কবিতা-ছড়া-গানে রোমেন রায়হান, গল্প-উপন্যাস-রূপকথায় ইমতিয়ার শামীম, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য জীবনী প্রবন্ধে তপন বাগচী, স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে মনসুর আজিজ এবং বই অলংকরণে মোমিন উদ্দীন খালেদ।

১৪২২ বঙ্গাব্দে কবিতা-ছড়া-গানে পলাশ মাহবুব, গল্প-উপন্যাস-রূপকথায় ইমদাদুল হক মিলন, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য জীবনী প্রবন্ধে রীতা ভৌমিক, স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে ড. আলী আসগর মাহফুজুর রহমান, অনুবাদ-ভ্রমণকাহিনিতে হাসান খুরশীদ রুমী, নাটকে আশিক মুস্তাফা এবং বই অলংকরণে সব্যসাচী মিস্ত্রী।

১৪২৩ বঙ্গাব্দে কবিতা-ছড়া-গানে মারুফুল ইসলাম ও আহমাদ উল্লাহ, গল্প-উপন্যাস-রূপকথায়  মোশতাক আহমেদ, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য জীবনী প্রবন্ধে শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল, অনুবাদ-ভ্রমণকাহিনিতে মশিউর রহমান জামিল বিন সিদ্দিক, নাটকে আবুল মোমেন এবং বই অলংকরণে উত্তম সেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৮
এমএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।