খোদ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে যাত্রীদের জিম্মি করে দিগুণ ভাড়া নিচ্ছে ময়মনসিংহগামী আলম এশিয়া, বিনিময়, ইসলাম, ইকরা, রোহিত, ইমাম, শ্যামলী বাংলা পরিবহন। নেত্রকোনাগামী আরজি ট্রাভেলস, শাহজালাল পরিবহন।
ঢাকা টু ময়মনসিংহের বিআরটিসি নির্ধারিত ভাড়া ২১৩ টাকা। সোমবার আলম এশিয়া, বিনিময়, ইসলাম, ইকরা, রোহিত, ইমাম, শ্যামলী বাংলা পরিবহনগুলো ৮০০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছে। অথচ এই রুটের সবেচেয়ে ভালো গাড়ি এনা পরিবহন ভাড়া নিচ্ছে ২২০ টাকা। অর্থাৎ দুশ টাকার ভাড়া নিচ্ছে ৮০০ টাকা।
একইভাবে নেত্রকোনাগামী পরিবহনের কাউন্টার ভাড়া পৌনে ৪‘শ টাকা। আর পরিবহনগুলো নিচ্ছে ৮’শ টাকা। শেরপুর ও জামালপুর গামী পরিবহনগুলোও একই ভাড়া নিচ্ছে। হেলপার ও কাউন্টারে থাকা দাললরা গেইট লক বলে যাত্রীদের টিকিট কিনতে বিভিন্ন ধরনের প্ররোচনা দিচ্ছে। কিছু যাত্রী অতিপ্রয়োজনে নির্ধারিত দামেই টিকিট কিনছে। তবে অধিকাংশরাই টার্মিনালে অপেক্ষা করছে।
অন্যদিকে এনা ও সৌখিন পরিবহনের কাউন্টারে দীর্ঘ লাইনে টিকিটের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা।
যাত্রী বনে ইকরার পরিবহনের হেলপারের কাছে টিকিটের জন্য দাম জানতে চাইলে বলেন, মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড গেইট লক সিট ৮০০, সামনে ৬০০ টাকা। একইভাবে ৮০০ টাকা করে টিকিট দিয়ে যাত্রী উঠাচ্ছেন উত্তরাঞ্চলগামী পরিবহনগুলো।
আর একটু সামনে গিয়ে ইয়েলু লাইনের টিকিটের ভাড়া কত জানতে চাইলে, এক দাম ৮০০, তবে সামনে গেলে ৫০০০ আর মোড়ায় গেলে ৬০০ টাকা বলে জানান কাউন্টার মেন আহাদুল হক।
২০০ টাকার ভাড়া ৮০০ কাটা কেন? জানতে চাইলে ইসলাম পরিবহনের হেলপার রাকিব বাংলানিউজকে বলেন, ৬ দিনে এক টিপ দিচ্ছি। ভাড়া বাড়ামু না কি করবো।
মা মনি পরিবহনের ড্রাইভার বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তায় জ্যাম থাকায় একদিন এক ট্রিপ দিতে হয়। তাই ভাড়া বাড়িয়েছি। আবার আসার সময় খালি আসতে হয়। তাই ভাড়া বেশি।
ঈদে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত দ্বিগুণ নিচ্ছে বাস মালিকরা। বিষয়টি বিআরটিয়ের মনিটরিং সেলের দায়িত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেট মাজহারুল ইসলামের কাছে অভিহিত করে জানতে চাইলে। তিনি প্রতিটি পরিবহনগুলোর নাম নোট করে নেন। এরপর তিনি বলেন যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে শাহজালাল ও নিরালা সুপারকে ৮ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছি।
এমন সময় উপস্থিত হন মহাখালী বাস টার্মিনালের নেতা ও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। ঠিক তখনি জরিমানা করা শাহজালাল পরিবহন শাস্তি না মেনে উল্টো কাউন্টার তালা দেয় বলে আবারও অভিযোগ করেন এক সঙ্গে আসা ১০-১৫ জন যাত্রী। মালিক সমিতির প্রধান এবং ম্যাজিস্ট্রেট সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর তা পালন না করায় ক্ষেপে যান আবুল কালাম। তিনি লোক দেখানোর সৌজন্য ফোন দিয়ে পরিবহনটির মালিককে লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দেন। পাশাপাশি চোখে ইশারা দিয়ে দায়িত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেটকে এ স্থান থেকে নিয়ে যান।
এরপর তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আপনার সব সময় খারাপ জিনিস লেখেন, বাস টার্মিনালের ৭০ শতাংশ যাত্রী সেবা দেয় এনা পরিবহন। আপনি দেখেন এনা পরিবহন ২২০ টাকায় ঈদে টিকিট দিচ্ছে। যাত্রীদের গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছে।
আলম এশিয়া, ঈগলসহ ছোট পরিবহনগুলো কি করছে সেগুলো না লিখে এনা কিংবা সৌখিন পরিবহন কি সেবা দিচ্ছে সেগুলো লেখেন। তিনি বলেন, এগুলো বন্ধ করতে হলে রাস্তার জ্যাম কমাতে বলেন মন্ত্রীকে। তাহলে এমনিতেই সব ঠিক হয়ে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৮
এমএফআই/বিএসকে