কুতুপালং-৫ এর একটি মসজিদের ঈমাম মওলানা সাইদুর রহমান বলেন, নামাজ শেষে বাংলাদেশ ও এদেশের প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করেছি। নিজ মাতৃভূমির কথা ভেবে চোখের জল ফেলেছি।
উখিয়ার কুতুপালং মধুরছড়ার ‘ই’ ব্লকের মাঝি মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, রাখাইনে সবই ছিল আমার। কিন্তু আজ নিঃস্ব। তারপরও গত বছরের তুলনায় এবছর ভালোভাবে ঈদ করেছি। নামাজ আদায় করেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাংস দিয়েছে। এভাবেই কেটে গেল প্রথম দিন।
কুতুপালং-৪ ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মাঝি মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, গত বছর কোরবানির ঈদের নামাজ আদায় করতে পারিনি। সেসময় রাখাইনের একটি জঙ্গলে ছিলাম। এখানে নামাজ পড়তে পেরেছি। টেকনাফের নয়াপড়া আনরেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শফিক মাঝি বলেন, মোনাজাতের সময় উপস্থিত কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। নিজ দেশে আমরা মা, বাবা, ভাই বোন, স্ত্রী, ছেলে মেয়েসহ স্বজনদের হারিয়েছি। কবরে পড়ে রয়েছে আমার মা। অন্তত তাদের জন্য হলেও কিছু একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারণ, একবছর হয়ে যাচ্ছে আমরা বাংলাদেশে এসেছি। এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা আমাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
এদিকে ঈদ উপলক্ষে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়। নাগরদোলাসহ নানা স্থানে মেলার আয়োজন করা হয়।
এ বিষয়ে বালুখালীর রোহিঙ্গা শিশু সাবেকুন্নাহার বলেন, ঈদ সালামি হিসেবে স্বজনরা আমাকে ১শ’ টাকা দিয়েছে। এই টাকা নিয়ে মেলায় এসেছি। দোলনায় চড়েছি, আইসক্রিম, বুট, চানাচুর খেয়েছি। বন্ধুদের সঙ্গে অনেক মজা করেছি।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, উখিয়ার ৩০টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত ১ হাজার ২০টি মসজিদ ও ৫৪০টি নূরানি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মক্তব), টেকনাফের নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঁচটি, অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২৪৫টি মসজিদ ও ২০টি নূরানি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন রোহিঙ্গারা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৮
টিটি/আরআর