তিনি শুধু বৃক্ষ প্রেমিকই নন বরং নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার এ যুগে মানবিক গুণসম্পন্ন একজন মানুষ।
সারাক্ষণ বৃক্ষ বা গাছ-গাছড়া নিয়ে পড়ে থাকা মানুষটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত মাদ্রাসায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত সজীবের পাশে দাঁড়িয়ে।
টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যাওয়া সজীবের চিকিৎসার ব্যয়ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন তিনি (হামিদ আব্দুল)। নিজের টাকায় প্রিন্টিং প্রেস থেকে সাহায্য আবেদনের পোস্টার ছাপিয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাগিয়ে দিয়েছেন।
এছাড়াও নিজের টাকায় তিন চাকার একটি ভ্যান তৈরি করেছেন। সেই ভ্যান চালিয়ে দিনরাত রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে সজীবের চিকিৎসার টাকা সংগ্রহে চষে বেড়াচ্ছেন গোটা নেত্রকোনা।
হামিদ বাংলানিউজকে বলেন, ছোট্ট একটি লিফলেট দেখার পর সজিবের হার্টে ছিদ্র হয়েছে জানতে পেরে খুবই মর্মাহত হই। মনস্থির করি দরিদ্র পরিবারের ছেলেটির পাশে দাঁড়াবো। টাকার অভাবে তার চিকিৎসা বন্ধ হতে দেবো না। তিন চাকার ভ্যান তৈরি করে বের হয়ে পড়ি চিকিৎসার টাকা সংগ্রহে।
বৃক্ষপ্রেমিক হামিদ ভ্যান চালিয়ে এ পর্যন্ত চল্লিশ হাজার টাকা সংগ্রহ করে সজিবের পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছেন। কিছুদিন তিনি নিজে অসুস্থ থাকায় সাহায্য তুলতে পারেননি। নয়তো টাকার পরিমাণ দ্বিগুণ হতো। 
আব্দুল হামিদ চলতি বছরের ১১ মে, জেলায় বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ের পর নানাভাবে নাগরিক সেবা দিয়েছেন। পুরো জেলা সপ্তাহব্যাপী বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় নানারকম সংকটে পড়ে মানুষ। এসময় নিজ খরচে জেনারেটর দিয়ে পানি তুলে বাসাবাড়িতে বিনামূল্যে সেই পানি পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। সেসময় কয়েক হাজার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এবার সজিবের চিকিৎসার টাকার যোগান দিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
তিনি জানান, রবিউল আওয়াল সজিব নেত্রকোনা শহরের কাটলি পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অটোরিকশা চালক মো. সুজনের ছেলে। সে জামিয়া ইসলামিয়া হুসাইনিয়া মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র।
তার চিকিৎসায় শরীক হতে যে কেউ ০১৭৫৯৩৫৩৭৭০ বিকাশ নম্বরে (পার্সোনাল) সাহায্য করতে পারেন।
আব্দুল হামিদ সারাবছর বিভিন্ন ধরনের গাছ-গাছড়া নিয়ে পড়ে থাকেন। দূরদূরান্ত ঘুরে ফলজাত ও ঔষধিসহ নানারকম গাছ সংগ্রহ করেন তিনি। নিজের বাড়ির আঙিনা ও জেলা শহরের সার্কিট হাউজ মাঠের এককোণে বিভিন্ন রকম ঔষধি গাছ লাগিয়েছেন। এসব গাছের পাতা দিয়ে শরবত তৈরি করে বিক্রি ও বিনামূল্যে মানুষদের খেতে দেন। মাঝেমধ্যে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ পরিসরে গাছ বিতরণের মতো কর্মসূচিও হাতে নেন তিনি। পরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন রকমের গাছের চারা বিতরণ করেন আব্দুল হামিদ। এজন্য জেলায় তিনি বৃক্ষপ্রেমিক হিসেবে পরিচিত।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৮
আরএ
.jpg)
