ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বর্জ্য কুড়াতেই ঈদ পার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৮
বর্জ্য কুড়াতেই ঈদ পার রাজধানীর অলিগলির ময়লা পরিষ্কার করছেন তারা

ঢাকা: ঈদের দিন পেরিয়ে দ্বিতীয় দিনও শেষ প্রায়। কোরবানির দিন সাধারণত ব্যস্ততার কারণে ঈদ উদযাপন যেন শুরু হয় দ্বিতীয় দিন থেকেই। তবে মুদ্রার অপর পিঠে আরেকটা বিপরীত চিত্রও রয়েছে এই আনন্দ উদযাপনের।

ঈদের দিন সকাল থেকেই লাখ লাখ গরু-ছাগল কোরবানি হয়েছে এই রাজধানীতে। যার বেশিরভাগই হয়েছে যার যার বাসার সামনের রাস্তায়।

কোরবানি শেষে যে যার মতো মাংস নিয়ে নিশ্চিন্তে বাসায় ঢুকে পড়লেও পশুর বর্জ্যগুলো পড়ে ছিলো রাস্তায়।

আর তখনি একদল মানুষের শুরু হয় দায়িত্ব। যারা কোরবানির পর থেকেই সেইসব বর্জ্য অপসারণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। দ্বিতীয় দিনের শেষভাগে যখন নগরীর বিনোদন কেন্দ্রমুখী মানুষের ঢল, তখনো বেশ কিছু এলাকায় দায়িত্ব পালন করে চলেছেন সেইসব পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর শ্যামলী, আদাবর, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেটসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের একই ব্যস্ততা দেখা গেছে। যাদের ভাষ্যমতে, ঈদ এলেই তাদের কাজ আরো বেড়ে যায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বর্জ্য সরাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন তারা।

শ্যামলী এলাকায় কোরবানির বর্জ্য সিটি করপোরেশনের গাড়িতে তুলছিলেন ফারুখ ও আলী আহম্মদ নামের দুই পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তারা জানান, আশপাশের এলাকার বর্জ্য এনে একসঙ্গে জড়ো করা হয়েছে। এখন গাড়িতে তুলে নিয়ে গেলেই এই এলাকার কাজ শেষ।

ঈদের দিনের কথা তুলতেই ফারুখ বলেন, গরিবের আবার ঈদ। সবাই ঈদ করে, কোরবানি দেয়। আর ময়লা টুকাইতে টুকাইতেই ঈদের দিন পার হইয়া গেলো, পরের দিনও শেষ।

আলী আহম্মদ বলেন, ময়লা সরানোর পরেও ঢাকা শহরে যেই দুর্গন্ধ। এবার বুঝেন আমরা ছুটিতে থাকলে এই শহরে আর কারো থাকা লাগবনা। দুর্গন্ধে সব দম বন্ধ হইয়া মারা যাইব। এতোগুলা মানুষ কাজ কইরাও ময়লা সরানো কমপ্লিট হয়না।

ঈদের দিনের কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, বুধবার (২২ আগস্ট) সারাদিন কাজ করেছেন। সন্ধ্যার পরে বিভিন্নজনের কাছ থেকে পাওয়া কিছু কোরবানির মাংস নিয়ে বাসায় গেছেন। তারপর রাতে রান্না করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে খেয়েছেন। এটাই আলী আহম্মদের ঈদ।

নগরবাসী সবাই নিজের স্বার্থ বুঝলেও এই পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের একজন ঠিকই নগরীর স্বার্থ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন। ফার্মগেট রাজাবাজার এলাকার পরিচ্ছন্নতাকর্মী রনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্দিষ্ট জায়গার ব্যবস্থা করলেও সেখানে কেউ কোরবানি দিবেন না। সবাই যার যেমনে নিজের বাসার সামনেই কোরবানি দিবো। এরপর রাস্তার মধ্যেই ময়লা-আবর্জনা, রক্ত সব ফেলাইয়া চইলা যাইব। এরপর আমাদের হইছে জ্বালা। সব গলিতে গলিতে যাও, গিয়া ময়লা টুকাইয়া একলগে কর।

অথচ নির্দিষ্ট একটা জায়গায় সবাই কোরবানি দিলে এক ঘণ্টার মধ্যেই সব পরিষ্কার হইয়া যাইতো। পুরা শহরটাও নোংরা হইতো না, দুর্গন্ধ থাকতো না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৮
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।