ঢাকা, সোমবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

জোয়ারে ঘাট প্লাবিত, কর্মস্থলে ফেরা মানুষের দুর্ভোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৮
জোয়ারে ঘাট প্লাবিত, কর্মস্থলে ফেরা মানুষের দুর্ভোগ পন্টুন ডুবে থাকায় গাড়ি ফেরিতে উঠতে পারছে না। ছবি: বাংলানিউজ

ভোলা: মেঘনার জোয়ারে রোববার (২৬ আগস্ট) দুপুরের পর থেকেই তলিয়ে গেছে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট। এতে ফেরিতে ওঠা-নামা করতে পারছে না কোনো যানবাহন। ভাটার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে উভয় পাড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র লাইন জটের। ফলে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোলার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের সহজ মাধ্যম ভোলা-লক্ষীপুর ফেরি সার্ভিস। এ রুটে তিনটি ফেরি চললেও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে একটি ফেরি দুইদিন ধরে বিকল থাকায় উভয় পাড়ে সৃষ্টি হয়েছে লাইন জটের।

এরই মধ্যে মেঘনার জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে ইলিশা ঘাট।

ঘাটের পন্টুন, র‌্যাম ও এপ্রোস সড়ক তলিয়া যাওয়ায় ফেরি চলাচলে বিঘ্নের সৃষ্টি হচ্ছে।  বিশেষ করে ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। শুধু তাই নয়, পণ্যবাহী পরিবহনগুলোও যথা সময়ে গন্তব্যে যেতে পারছে না।

পটুয়াখালী থেকে চট্রগ্রামের যাত্রী রোমানা বলেন, ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটে বসে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।  

গার্মেন্টস কর্মী রাবিয়া (৩৫)। চট্টগ্রামের উদ্দেশে বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছেন রোববার ভোর ৪টায় কিন্তু বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ফেরিঘাটে বসে থেকেও যেতে পারেননি। ছোট ২ ছেলেসহ পরিবারের ৮ সদস্য নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি। ইলিশা ঘাটে চরম দুর্ভোগ নিয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাকে।  

রাবিয়া বলেন, ঈদের একদিন আগে শত ভোগান্তি উপেক্ষা করে চরফ্যাশনের দক্ষিণ আইচা নিজের গ্রামের বাড়ি এসেছিলাম।  ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে যেতে বাড়ি থেকে রওনা দেই কিন্তু ১১ ঘণ্টা ধরে ইলিশা ঘাটে ফেরির জন্য অপেক্ষা করেও ফেরির দেখা পাচ্ছিনা। সোমবার গার্মেন্টস খুলবে। ঠিকমত যেতে না পারলে অনেক বিপদে পড়তে হবে। কিন্তু কখন যাবো তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

লালমোহন থেকে আসা অপর যাত্রী আরজু বেগম। তিনিও চট্টগ্রামের টেকেরহাট এলাকার গার্মেন্টস কর্মী। তিনিও ফেরির অপেক্ষায়। রোববার খুব ভোরে রওনা দিয়েও যেতে পারছেন না।  জোয়ারের পানিতে ইলিশা ফেরিঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ফেরিতে উঠতে পারছেন না।

শুধু বারিয়া আর আরজু বেগম নয়, তাদের মত অনেক যাত্রীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।  

কয়েকজন যাত্রী জানান, ঘাটটি নিচু থাকার কারণে সামান্য জোয়ারে ডুবে যায়, এতে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়া মাঝে মধ্যেই ফেরি বিকল থাকে। ঘাটটি আরো উঁচু হলে কিছুটা দুর্ভোগ কমতো।

ঘাটে অপেক্ষমান হানিফ পরিবহনের শ্রমিক রহমান অভিযোগ করে বলেন, ফেরিতে আগে যাত্রীবাহী পরিবহন নেওয়ার কথা থাকলেও পরিবহন নিচ্ছে কম, ট্রাক ও অন্য গাড়ি পারাপার করছে তাই যাত্রীদের এতো ভোগান্তি।

ইলিশ ফেরি ঘাটের অপারেশনের দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিটিসি টার্মিনাল সহকারী হারুন অর রশিদ বলেন, জোয়ারে ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচল কিছুটা বিঘ্নের সৃষ্টি হচ্ছে, আমরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।  

বিআইডব্লিটিএ টার্মিনাল সহকারী আবুল বাশার বলেন, কিছুদিন আগে ঘাটটি মেরামত করা হয়েছিলো কিন্তু বার বার জোয়ারে বিধ্বস্ত হয়েছে, শিগগিরই ঘাট মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।