ঢাকা, সোমবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সাইকেলে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রাস্তা জয় ৩ বাংলাদেশির

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৮
সাইকেলে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রাস্তা জয় ৩ বাংলাদেশির সাইকেলে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রাস্তায় মৌলভীবাজারের ছেলে রাজীব দে অনিক

মৌলভীবাজার: ‘সি টু সামিট হিমালয়ান সাইকেল এক্সপেডিশন’ নামে সাইকেল যাত্রায় বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রাস্তা খারদুংলা পাস জয় করেছেন তিন বাংলাদেশি সাইক্লিস্ট। তারাই একমাত্র বাংলাদেশি সাইক্লিস্ট দল যারা সমুদ্রপৃষ্ঠের শূন্য ফুট থেকে পাঁচ হাজার ১১২ কিলোমিটার বাইসাইকেল চালিয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ উঁচু রাস্তা অতিক্রম করে দেশের পতাকা উড়িয়েছেন। যার উচ্চতা ১৮ হাজার ৩৮০ ফুট।

এ অভিযোনে সফল মৌলভীবাজারের সন্তান রাজীব দে অনিক তার সংগঠন মৌলভীবাজার সাইক্লিং কমিউনিটির ব্যানারে মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানান।

রাজীব মৌলভীবাজার শহরের সৈয়ারপুর এলাকার সতীশ দের ছেলে।

পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী ও মৌলভীবাজার সাইকেলিং কমিউনিটির এডমিন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন রাজীব দে অনিক
গত ১৭ জুন থেকে ১৭ আগস্ট (৬১) দিনের এ অভিযানে রাজীবের সঙ্গে ছিলেন গাজীপুর সাইকেল রাইডার্সের সদস্য কাজী শরীফ ও জাহাঙ্গীরনগর সাইক্লিং ক্লাবের তোজ্জাম্মেল হোসেন মিলন।

সংবাদ সম্মেলনে রাজীব জানান,  গত ১৭ জুন কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের সমুদ্রপৃষ্ঠের শূন্য ফুট থেকে তাদের তিন সদস্যের সাইক্লিস্ট দলটি যাত্রা শুরু করে। বাইসাইকেল চালিয়ে দেশের ফুলবাড়ী সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন তারা। পরে ভারতের নয়টি প্রদেশ পশ্চিম বঙ্গ, বিহার, ঝাড়খন্ড, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি, চন্ডিগড়, পাঞ্জাব, হিমাচল ও জুম্মু কাশ্মির ঘুরে ৬১ দিনে পাচঁ হাজার ১১২ কিলোমিটার বাইসাইকেল চালিয়ে পৌঁছে যান, তাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু যানবাহন চলাচলের রাস্তা খারদুংলা পাস। যার উচ্চতা ১৮ হাজার ৩৮০ ফুট।

তিনি আরও জানান, দলগতভাবে বাংলাদেশ থেকে এ বীরত্বপূর্ণ অর্জন তাদেরই প্রথম। সিলেট বিভাগ থেকে রাজীব দে অনিক প্রথম সাইক্লিস্ট, যিনি ১৮ হাজার ৩৮০ ফুট ওপরে বাইসাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন।

জানা যায়, তাদের এ অভিযানে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পর্যটন করপোরেশন, ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাই-কমিশন ও ভারতীয় হোম অফিস থেকে অনুমতি নিতে হয়। এছাড়া ভারতের কয়েকটি এলাকায় বিশেষ অনুমতি সংগ্রহ করে মিশন সম্পন্ন করতে হয়েছে। ভারতে থাকাকালীন সেদেশের স্থানীয় প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া তাদের নিয়ে খবর প্রকাশ করেছিল।

রাজীব দে অনিক বাংলানিউজকে বলেন, ‘অভিযানের প্রতিটা ধাপে আমাদের নানা প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয়েছে। বিশেষ করে কাশ্মিরে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এক ধরণের লাইফ রিস্ক ছিল। পাহাড়ি রাস্তা সাইকেল চালিয়ে উঠতে গিয়ে ঠাণ্ডায় অচেতন হয়ে পড়েছি। এতো ঠাণ্ডা ছিল, যে সাইকেলিং করলে শরীর গরম থাকার কথা কিন্তু তা হয়নি। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার এ বিজয় আমি আমার সব সহযোদ্ধা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছি। তাদের অনুপ্রেরণা না পেলে এতোটা সাহস করতাম না। ’

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার সাইক্লিং কমিউনিটির মডারেটর ইমন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন,  ‘গৌরবান্বিত অর্জনের খবর আমাদের সাইকেলিংয়ের প্রতি আরও উদ্বুদ্ধ করবে। মফস্বলের একজন সাইকেলিস্ট এমন রেকর্ড করতে পারে, তা রাজীব প্রমাণ করেছেন। তিনি আমাদের সংগঠনের সদস্য হিসেবে আমরা গর্বিত। ’

২০১৬ সালের ১১ মার্চ মৌলভীবাজার সাইক্লিং কমিউনিটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সাইক্লিংয়ের মাধ্যমে মৌলভীবাজারের জন্য অনেক অর্জন বয়ে আনে। তারমধ্যে তাদের দুই সদস্য মাত্র ২৩ দিনে দেশের ৬৪টি জেলা ভ্রমণ করার রেকর্ড করেন। এছাড়া সংগঠনের সদস্যরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, যৌতুক ও বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে সাইকেলিং করে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ও নানা সামজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮ , ২০১৮
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।