ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনা মানছে না কেউ

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৮
ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনা মানছে না কেউ নিয়ম ভেঙেই রাজধানীর সড়কে চলছে বাস/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: পৃথিবীর সব দেশেই নির্দিষ্ট স্টপেজে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়। এর বাইরে যাত্রী ওঠানো-নামানো করলেই গুনতে হয় জরিমানা। আমাদের দেশেও কাগজে-কলমে নিয়ম আছে নির্দিষ্ট স্থানেই যাত্রী ওঠা-নামা করাতে হবে। কিন্তু যুগ যুগ ধরে সেই নির্দেশনা থাকলেও মানছেন না কেউ।

রাজধানীর সড়কে যে যেখানে দাঁড়িয়ে হাত তুলছেন সেখানেই বাস থেমে যাত্রী ওঠাচ্ছে। আবার চলন্ত অবস্থায় রাস্তার মাঝেই নামাচ্ছে যাত্রী।

এতে প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ঝরে যাচ্ছে তাজা প্রাণ।
 
আর এই সড়ক দুর্ঘটনা কেন্দ্র করে তরুণ শিক্ষার্থীরা রাজপথে নামে। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশকিছু অনুশাসন দেন। যেগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব পড়ে ট্রাফিক পুলিশের ওপর। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সংবাদ সম্মেলন করে নির্দেশনা দেন রাজধানীতে নির্দিষ্ট স্টপেজ ছাড়া যাত্রী উঠবে না, নামানোও যাবে না। প্রতিটি স্টপেজে যাত্রা ওঠা-নামা শেষে গেট লক করে দিতে হবে।
নিয়ম মানছে না খোদ সরকারি বাস 
নির্দেশের পরদিন অর্থাৎ, বুধবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর শ্যামলী থেকে নিউমার্কেটমুখী মিরপুর রোডের কয়েকটি স্পট ঘুরে দেখা যায়, সে নির্দেশনা অনেকটাই উপেক্ষিত। ট্রাফিক পুলিশ দেখলে অনেকে গেট লক করে দিচ্ছেন আবার ট্রাফিক পুলিশ চোখের আড়াল হলেই আগের চিত্র।
 
আর নির্দেশনা ভাঙতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি। সরকারি এ পরিবহন ট্রাফিক পুলিশকে যেন পাত্তাই দেয় না। বুধবার সকালে কল্যাণপুর থেকে ছেড়ে আসা বিএরটিসির একটি বাস শ্যামলী ওভারব্রিজের আগ থেকে যাত্রী ওঠানো শুরু করে, যেখানে যে দাঁড়িয়ে হাত তুলছে গাড়ি থেমে যাচ্ছে। বিআরটিসির পেছনে শত শত গাড়ি দাঁড়িয়ে হর্ন বাজালেও চালকের কানে যায়নি।
নিয়ম ভেঙেই রাজধানীর সড়কে চলছে বাস/ছবি: বাংলানিউজ 
শুধু বিআরটিসি নয়, মিরপুর থেকে গুলিস্তানগামী নিউ ভিশন, প্রজাপতি, ঠিকানা, গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা ৮ নম্বর বাস, কেউ মানছে না ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনা।
 
আর নির্দেশনা তদারকি করতে ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতিও তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। শ্যামলী ওভারব্রিজ পার হয়ে শিশু মেলা, কিডনি হাসপাতাল, কলেজগেট পার হয়ে রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ, সংসদের সামনে আসদগেট এলাকা সর্বত্রই যাত্রী ওঠানো হচ্ছে ও নামানো হচ্ছে।
 
ট্রাফিক পুলিশের পশ্চিম বিভাগের (রমনা-ধানমন্ডি) উপকমিশনার (ডিসি) লিটন কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা গতকাল থেকেই নিদের্শনা বাস্তবায়নে কাজ করছি। বহুদিনের অভ্যাস একদিনে তো আর ঠিক হবে না। আমাদের ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা স্টপেজে দাঁড়িয়ে বাসের যাত্রী ওঠানো শেষে লক করে দিচ্ছে। যত্র তত্র যাত্রী ওঠা-নামার দায়ে আমরা অনেক মামলা দিয়েছি। ওরা দুষ্টু, ওদের আইনের আওতায় আনতে সময় লাগবে।

শুধু শ্যামলী বা নিউমার্কেট নয়, রাজধানীজুড়েই একই চিত্র। তবে আগের চাইতে অনেকটা শৃঙ্খলায় আসছে গণপরিবহন। এখন অনেক বাসেরই গেট লক করে যেতে দেখা গেছে।
 
ট্রাফিকের এ নির্দেশনা মানতে যাত্রীদের মধ্যেও নেই কোনো সাড়া। রাজধানীর সর্বত্র রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছে শত শত যাত্রী। তাছাড়া নির্দিষ্ট স্টপেজ লেখা জায়গাও চোখে পড়েনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৮
এসএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।