তিনি বলেন, যদি কারো কোটা চাই তাহলে এখন আবার কোটা চাই বলে আন্দোলন করতে হবে। আর সেই আন্দোলন যদি ভালোভাবে করতে পারে তখন ভেবে চিন্তে দেখবো কি করা যায়।
বুধবার (০৩ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বুধবার (০৩ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে কোটা পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে কখনো কোটার প্রয়োজন দেখা দিলে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে কোটা বাতিলের পর সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা নিয়ে আন্দোলন, স্বাধীনতার পরই এ কোটা দেওয়া হলো। যারা মুক্তিযোদ্ধা, যারা নির্যাতিত নারী বা নারীদের জন্য, যারা অনগ্রসর তাদের জাতির পিতা এটা করে গিয়েছিলেন। ’
‘কোটা যদি পূরণ না হয়- এটা কোনো আন্দোলন লাগেনি। তার আগে থেকেই যখনই কোটা পূরণ হতো না আমি প্রতি বছর রিলাক্স করে দিতাম যে এটা তালিকা থেকে দিয়ে দেওয়া। সেভাবে কিন্তু হচ্ছিল। তারপরও বললাম যে এটাকে বার বার না এনে এটাকে স্ট্যান্ডার্ড একটা নিয়ম করে ফেল যে যেখানে কোটা পূরণ না হবে জায়গা যেনো ফাঁকা না থাকে সেখানে তালিকা থেকে পূরণ করা হবে। সেভাবে কিন্তু চলছিল। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ অবস্থায় হঠাৎ আন্দোলন। আন্দোলন মানে- আমরা ছাত্র রাজনীতি করেছি, ছাত্র আন্দোলন করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে- আপনি বলে ভিসির বাড়িতে গিয়ে যে ঘটনা ঘটানো হলো আগুন দেওয়া, পোড়ানো লুটপাট করা, বেডরুমে ঢুকে...। ’
‘মেয়েরা রাত একটা দেড়টা সময় সেই সুফিয়া কামাল হলে থেকে বের হয়ে চলে এসেছে। শামসুন্নাহার হল থেকে বের হয়ে এসেছে, বিভিন্ন হল থেকে বের হয়ে এসেছে। তারা মিছিল করেছে, বিভিন্ন রকম লোক আছে একটা মেয়ের যদি ক্ষতি হতো সে দায়িত্ব কে নিতো। সারা রাত আমি জাগা... সকাল সাড়ে ৬টার সময় মেয়েরা যখন নিরাপদে হলে ঢুকেছে তারপরে... । ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মেয়েরাও কোটা চায় না। ভালো কথা। মুক্তিযোদ্ধারাও এখন চাকরি পাওয়ার মতো কেউ নেই। সবই তো মারা গেছে। তাও বলেছিলাম যে মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে-মেয়ে, বংশপরম্পায়...। ’
‘যারা আন্দোলন করলেন তাদের সঙ্গে আমাদের সেক্রেটারি জেনারেল যখন মিটিং করলেন সেখানে অনেকে বলে আমি মুক্তিযোদ্ধার নাতি- আমরা চাই না কোটা। মেয়েদের একজন বললো আমরা কোটা চাই না, আমরা প্রতিযোগিতা করেই আসবো। মেয়েদের মধ্যে যখন আমি আত্মবিশ্বাস দেখলাম তারা প্রতিযোগিতা করে আসবে তাহলে আর কোটা থাকার দরকার কি। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার নাতিই বলে আমি কোটা চাই না। বলেন দরকার আছে আর কোটা রাখার। আর কোটা থাকলে আন্দোলন, কোটাই নাই আন্দোলনও নাই, সংস্কারও নাই। ’
‘যখন আমি বললাম কোটা থাকবে না। তখন বললো না বাতিল চাইনি, সংস্কার চাচ্ছি। তার আগে বললো বাতিল এরপর সংস্কার। কোটা যদি না থাকে সংস্কারের প্রশ্ন উঠবে না। ’
কোটা ফেরত চাইলে আন্দোলন করতে হবে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আর যদি কারো কোটা চাই তাহলে এখন আবার কোটা চাই বলে আন্দোলন করতে হবে। আর সেই আন্দোলন যদি ভালো ভাবে করতে পারে তখন ভেবে চিন্তে দেখবো কি করা যায়। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেটা আমি সহজ বুঝি সেটা বলছি। এরপর যদি কেউ কোটা চায় তাকে তার জন্য আন্দোলন করতে হবে। বলতে হবে আমি এই কোটা চাই। সেটা আগে বলুক, আন্দোলন করুক। আন্দোলন ছাড়া দেবো না, আন্দোলন করতে হবে। ’
**যারা এ ধরনের কাজ করে তারা বিকৃতমনা
বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৮
এমইউএম/এসকে/এসএইচ