বুধবার (০৩ অক্টোবর) বিকেলে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে ‘আন্তর্জাতিক লোক সংস্কৃতি উৎসবে’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, একদিনে বা হঠাৎ করে সংস্কৃতি গড়ে ওঠে না।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, যতোদিন বাংলার আকাশ থাকবে, যতোদিন বাংলার বাতাস থাকবে, ততোদিন বাংলার সংস্কৃতি থাকবে।
গ্রাম-শহর সব জায়গায়ই তথ্যপ্রযুক্তি এখন সবার জীবনে প্রভাব ফেলছে। তথ্যের অবাধ প্রবাহের ফলে সারাবিশ্ব একটি গ্রামে পরিণত হয়েছে। ফলে আকাশ সংস্কৃতি এখন বাস্তবতা। বিভিন্ন দেশ ও জাতির সংস্কৃতিতে এর প্রভাবও দ্রুত বিস্তার করছে, যোগ করেন রাষ্ট্রপতি।
সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনা ও ধ্যান-ধারণা বদলাচ্ছে একই গতিতে। তাই আকাশ সংস্কৃতির ডামাডোলে গা ভাসিয়ে দিলে চলবে না। বরং তার থেকে ভালো দিকগুলো গ্রহণ এবং মন্দ দিকগুলোকে বর্জন করতে হবে। সারাবিশ্বে আমাদের সংস্কৃতির উপাদান ছড়িয়ে রয়েছে, সেগুলো সংগ্রহ করে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। আর তা হলেই বহির্বিশ্বে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ফুটে উঠবে।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, নির্মাতা, সংগ্রাহক, গবেষকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সংস্কৃতির উপাদান সংগ্রহ করে সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলতে এগিয়ে আসবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সামনের দিকে যাচ্ছে। শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও উন্নয়নের ছোঁয়া আজ স্পষ্ট। এমনই যুব সন্ধিক্ষণে দেশি-বিদেশি লোক সংস্কৃতি, গবেষক ও শিল্পীদের নিয়ে আজকের আন্তর্জাতিক লোক সংস্কৃতি উৎসব নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এর মাধ্যমে বাংলার মান, বাংলার জান ও বাংলার লোক সংস্কৃতি আবারও চাঙ্গা ও গতিশীল হবে। বিশ্ব সংস্কৃতির ধারায় সম্পৃক্ত হবে এ দেশের সংস্কৃতির অনন্য গাঁথা, মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
মূল বক্তব্য শেষ করে পরে তিনি অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডাক, টেলি যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
এতে উপস্থিত ছিলেন- যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সবুজ কলি সেন, মূল প্রবন্ধকার লোকগবেষক অধ্যাপক যতীন সরকার, ড. দীনেশচন্দ্র সেনের প্রপৌত্রী দেবকন্যা সেন প্রমুখ।
পুলিশ সুপার (এসপি) জয়দেব চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, এর আগে রাষ্ট্রপতি নেত্রকোনায় পৌঁছে শহরের পুরাতন জেলখানা রুটে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দেড় হাজার সদস্য একযোগে কাজ করেছেন।
বুধবার (০৩ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে তিনি এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর আগে তিনি হেলিকপ্টারে করে নেত্রকোনা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্পে এসে পৌঁছান। এরপরে তিনি জেলা সার্কিট হাউজে গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৮
এসআই