ঢাকা, শনিবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ঢামেক বার্ন ইউনিটের এসি বিকল, হাতপাখাই ভরসা দগ্ধদের

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৮
ঢামেক বার্ন ইউনিটের এসি বিকল, হাতপাখাই ভরসা দগ্ধদের ঢামেক বার্ন ইউনিটে দগ্ধ রোগীদের বাতাস করা হচ্ছে

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের এইচডিইউতে (হাই ডিপেন্ডেন্সি কেয়ার ইউনিট) দগ্ধ রোগী শরীরের জ্বালা-পোড়া কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে হাতপাখার বাতাস দিয়ে। রোগীরা যন্ত্রণায় ছটফট করছে, তাদের স্বজনরা পাশে দাঁড়িয়ে তাদের শরীরের যন্ত্রণা কমানোর জন্য হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছে।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে বার্ন ইউনিটে ২য় তলায় এইচডিইউতে গিয়ে দেখা যায়, দগ্ধ রোগীরা গরমে ছটফট করছে। আর তাদের স্বজনরা হাতপাখার বাতাস দিয়ে রোগীকে কিছুটা প্রশান্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে।

কিন্তু তাতে  স্বস্তি মিলছে না দগ্ধদের।  

শনিবার রাজধানীর খিলক্ষেতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দগ্ধ রিফাত শিকাদার (জনি) বার্ন ইউনিটে এইচডিইউর ১নং বেডে চিকিৎসাধীন। তার ছোট ভাই হিমু জানান, জনির ৯৫ শতাংশ পোড়া।

সকাল থেকে এইচডিইউতে এসি নষ্ট থাকার কারণে রোগীর আরো বেশি কষ্ট হচ্ছে ও চিৎকার চেঁচামেচি করছে। হাতপাখার বাতাস করে জনিকে প্রশান্তি দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও বা চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এদিকে সিরাজগঞ্জ সদর এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শামীম মন্ডল (১৮)। হাতপাখা দিয়ে বাতাস করতে থাকা শামীমের চাচা আবদুল মালেক বলেন, সকালে থেকে আমি নিজেই ঘেমে ঘেমে অস্থির হয়ে যাচ্ছি। আমি তো সুস্থ মানুষ, যেখানে এইচডিইউ’র ভেতরেই আমি থাকতে পারছি না, আর আমার ভাতিজার ৬০ শতাংশ পোড়া, তার কতটা কষ্ট হচ্ছে তা তো বুঝতেই পারছেন।  

এইচডিইউর দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, বার্ন ইউনিটে ২য় তলায় ২টি এইচডিইউ আছে। একটি শিশুদের, অপরটি বড়দের। বড়দের এইচডিইউতে মোট ১১টি এসি, পুরুষদের রুমে ৪টি ও মহিলাদের রুমে ৪টি রয়েছে। এছাড়া বাইরে আছে আরো ৩টি।

তিনি আরো জানান, দুই মাস ধরে একে একে ১০টি এসি নষ্ট হয়েছে। একটি বাকি ছিল, আজ সেটিও নষ্ট হয়ে গেলো।  

তিনি আরো জানান, শুরুতে মৌখিকভাবে বিষয়গুলো কর্তৃপক্ষ বারবার জানানো হয়েছে। তার পরে লিখিতভাবে তাদের জানানো হয়েছে। কিন্তু এসির মেরামতকারীরা দেখে গেছে, ঠিক হয়ে যাবো বলে জানালেও এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি। এইচডিইউর দুই রুমে নারী-পুরুষ মিলে মোট ২৮ জন দগ্ধ রোগী আছে। এসি নষ্ট থাকার কারণে তারা অনেক কষ্টের মধ্যে আছে।  

ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে প্রধান অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ খন্দকার বাংলানিউজকে জানান, এইচডিইউর এসি গুলো কেন যেন বারবার নষ্ট হয়েছে যাচ্ছে। ঠিক করা হলেও কেন যেন ঠাণ্ডা বাতাস হয় না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আগামীকাল (সোমবার) যে করেই হোক এসি কয়েকটা চালু করতে হবে। এর পরে নতুন এসির ব্যবস্থা করা যায় কি-না,  সেটা নিয়েও আমরা কাজ করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৮
এজেডএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।