ঢাকা, শনিবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বিচারহীনতাই বাড়িয়ে দিচ্ছে যৌন নিপীড়ন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৮
বিচারহীনতাই বাড়িয়ে দিচ্ছে যৌন নিপীড়ন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আহ্বানে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ-ছবি-বাংলানিউজ

জবি: বিচারহীনতার কারণে যৌন নিপীড়ন বেড়ে যাচ্ছে দাবি জানিয়ে যৌন নিপীড়কদের বিরুদ্ধে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সারাবান তহুরা।

সোমবার (৮ অক্টোবর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রধান ফটকের সামনে মেয়েদের উত্ত্যক্তকরণ, যৌন হয়রানি, নারী নির্যাতন ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আহ্বানে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।  

মানববন্ধনে সুত্রাপুর থানা উদীচির সহ-সভাপতি আবু তাহের বকুল বলেন,  ছাত্ররা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে।

কিন্তু খারাপ চরিত্রের ছাত্রদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে ছাত্রদেরকেই। দেশের যৌন নিপীড়কদের কালো হাত ভেঙে দিতে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। উপযুক্ত শাস্তি দিতে না পারলে যৌন নিপীড়ন রোধ করা যাবে না। বিচারহীনতা যেন যৌন নিপীড়নকে বাড়িয়ে দিতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড ইউনিটের পরিচালক অ্যাডভোকেট মাকসুদা আক্তার বলেন, যারা যৌন নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত তাদের সামাজিকভাবে, পারিবারিকভাবে বয়কট করতে হবে। কারণ মানুষ তার জীবনের সব ধরনের শিক্ষার ভিত্তি পায় সমাজ থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া একজন ছাত্র যখন এমন সংকীর্ণ মনের পরিচয় দেয় তখন আমরা হতাশ। এদের বিরুদ্ধে জোরালো ব্যবস্থা নিতে হবে।  

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, দুই একজনের জন্য যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মান ক্ষু্ণ্ন হয়, এটা মেনে নিতে পারি না। আমাদের সব ছাত্রদের উচিত এদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়া।  

এসময় তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দ্বারা ছাত্রী লাঞ্চিত হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এমন শিক্ষকের যে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিচার হয় না, এমন শিক্ষক যে বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা কি শিখতে পারে।

মানববন্ধন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছু এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে হেনস্থার ঘটনার কঠিন সাজা দাবি করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক কানিজ ফাতেমা টগর। তিনি বলেন, একজন মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় হেনস্থা হয়ে থানায় মামলা করার সাহস রাখে না। প্রশাসনের উচিত নিজেরা তদন্ত করে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করা। মোবাইল কোর্টে বিচার হতে পারতো। তাহলে কি ভর্তি পরীক্ষা বাদ দিয়ে এখন বিচারের জন্য মামলা করবে? 
 
মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সারাবান তহুরা বলেন, দোষীরা ছাড়া পাওয়ায় যৌন নিপীড়নের প্রবণতা বাড়ছে। এসময় তিনি সব যৌন নিপীড়কদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা এক শিক্ষার্থীকে ‘যৌন হয়রানি’ করার অভিযোগে ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় কোতয়ালী থানা থেকে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৮
কেডি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।