ঢাকা, শনিবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বৃষ্টির দেখা নেই, বিপাকে লক্ষ্মীপুরের আমন চাষিরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৮
বৃষ্টির দেখা নেই, বিপাকে লক্ষ্মীপুরের আমন চাষিরা পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে রোপা আমন ধানের ক্ষেত। ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবে গত দুই সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি নেই লক্ষ্মীপুরে। মাঝে-মধ্যে আকাশে মেঘ ভর করলেও বৃষ্টির দেখা মিলছে না। পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে চলতি মৌসুমের রোপা আমনের ক্ষেত। বাধ্য হয়ে অনেক কৃষক শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি উঠিয়ে ধানগাছ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। এ অবস্থায় ভালো ফলন না হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করছেন কৃষকরা।

সোমবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর সদর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বেশকিছু এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন এলাকার প্রান্তিক কৃষক দ্বীন মোহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, গত ১৪/১৫ দিন ধরে বৃষ্টি নেই।

পানির অভাবে রোপা-আমনের ক্ষেত শুকিয়ে গেছে। খাল থেকে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি উঠিয়ে ধানগাছ বাঁচানোর চেষ্টা করছি।

রোপা আমন ধানের ক্ষেত।  ছবি: বাংলানিউজ পার্শ্ববর্তী চর লরেন্স এলাকার কৃষক আক্তার আলম বলেন, আমার জমির আশেপাশে খাল না থাকায় পানি সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এক পশলা বৃষ্টির জন্য আমার মতো হাজার হাজার কৃষক অপেক্ষা করছেন। এবার আবাদ ভালো হয়েছে, কিন্তু পানির অভাবে ভালো উৎপাদন দিয়ে শঙ্কায় আছি।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জানান, মৌসুমের এ সময় রোপা-আমান ধানের জন্য জমিতে ৬ ইঞ্চি পানি প্রয়োজন। অথচ এখন পানি শূন্য আমন ক্ষেত। বৃষ্টি না হলে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

কমলনগর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকতারুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে লক্ষ্মীপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে আমন ধানের আবাদ। তবে মৌসুমের মাঝামাঝি সময় বৃষ্টি না হওয়ায় চিন্তিত কৃষকরা। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের ডোবা, পুকুর ও খাল থেকে পানি সংগ্রহের পরামর্শা দেওয়া হয়েছে।  

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার পাঁচ উপজেলায় ৭২ হাজার ৫৯৭ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ হাজার ২৯৩ হেক্টর বেশি জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলা উফশী জাতের ১৯ হাজার ২৩০ হেক্টর, স্থানীয় জাতের ২ হাজার ১০০ হেক্টর, হাইব্রিড ৫০ হেক্টর। রায়পুরে হাইব্রিড ১ হাজার হেক্টর, উফশী ৯ হাজার, স্থানীয় ১৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে।  

এছাড়া রামগঞ্জে ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে উফশী ধানের আবাদ করে কৃষকরা। কমলনগরে উফশী ২২ হাজার হেক্টর, স্থানীয় জাতের ১ হাজার ৫০০ হেক্টর ও কমলনগরে  ১৮ হাজর ২৬০ হেক্টরে উফশী এবং ১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ধানের আবাদ করা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. বেলাল হোসেন খান বাংলানিউজকে বলেন, চলতি মৌসুমে রোপা-আমন আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। প্রত্যাশিত ফসল উৎপাদনে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারাসহ কৃষি বিভাগ। আশা করি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদনও ভালো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৮
এসআর/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।