বুধবার (১০ অক্টোবর) এ মামলার রায়ে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং বাকি ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। রায়ের পরে নিজ নিজ প্রতিক্রিয়ায় নিজেদের ও দলের অবস্থান তুলে ধরেছেন দু’টি দলের নেতারা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতেই আমাদের প্রতিক্রিয়া হয়েছে। রায়কে কেন্দ্র করে নেক জল ঘোলা হয়েছে, আমরা এ রায়ে খুশিও নই, আবার একেবারে যে সন্তুষ্ট তাও নই।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, আসলে যে ষড়যন্ত্রকারী ও এসবের মদদদাতা তারই আমরা ফাঁসি চেয়েছিলাম। আদালতের রায় আমরা সম্মানের সঙ্গে মানি। যারা অপকর্ম করে বা করতে চায়, তাদের যে এ সরকার আইনের আওতায় এনে শাস্তির মুখোমুখি করতে পারে সেজন্য এ সরকারকে ধন্যবাদ।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত বলেন, এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের হত্যা করে দলকে নেতৃত্ব শূণ্য করতে চেয়েছিল মাস্টারমাইন্ডরা। আমরা হাওয়া ভবনের নিয়ন্ত্রণকর্তাদের ফাঁসি চেয়েছিলাম, যেহেতু সেখানে বসেই এ হত্যার চক্রান্ত হয়েছিলো। তবুও আদালতের রায়ের প্রতি আমরা সব সময় শ্রদ্ধাশীল।
নারায়ণগঞ্জ শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভূঁইয়া সাজনু বলেন, ২০০৪ সালে ওই সমাবেশে আমিও ছিলাম। বিচার আমরা পেয়েছি, তবে বিচারটি আরেকটি কঠিন প্রয়োজন ছিলো। উচ্চ আদালতে যদি আপিল হয় তাহলে আমরা সেখানে অধিকতর ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করি। এ রায়ে প্রমাণিত হলো পাপ বাপকেও ছাড়ে না।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, আগামীতে এক তরফা নির্বাচনের জন্য এ রায়। এ রায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে রায়। আমরা শুধু নারায়ণগঞ্জবাসী নয়, পুরো দেশের মানুষ এ রায়কে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, এটি একটি ফরমায়েশি রায়। এ রায় প্রতিহিংসার রায়, কারণ আমি মামলার কাগজপত্র দেখেছি সেখানে কোনোভাবেই তারেক রহমানের সাজা দেওয়া যায় না। সরকার তার নির্দেশে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের সাজা দিয়ে রাজনৈতিক ফয়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। এ রায় দেশবাসী ও জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম বলেন, এ রায়ের মধ্য দিয়ে আইন ও বিচারালয় আরেকটি কালো দিন ও কালো অধ্যায় ইতিহাসে নথিভুক্ত করলো। এ রায় সাজানো। গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে উস্কে দিতে ও বাধাগ্রস্ত করতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মনোবল ভাঙতেই এ মুহূর্তে এমন রায়।
এর আগে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জড়িত থাকার দায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে আরও ১১ আসামিকে।
বুধবার পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূরউদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৮
আরবি/