ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফেলানী হত্যার ৮ বছর, ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় পরিবার

ফজলে ইলাহী স্বপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৯
ফেলানী হত্যার ৮ বছর, ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় পরিবার কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলানো কিশোরী ফেলানীর মরদেহ (ফাইল ফটো)

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ায় কিশোরী ফেলানী হত্যাকাণ্ডের আট বছরেও ন্যায়বিচার পায়নি তার পরিবার। তবে, ন্যায়বিচারের আশায় আদালতের দিকে তাকিয়ে আছে পরিবারটি।

ফেলানী হত্যার ৮ বছরে সোমবার (০৭ জানুয়ারি) দুপুরে নাগেশ্বরী উপজেলার নাখারগঞ্জের নিজ বাড়িতে মিলাদ ও দোয়া-মাহফিলের আয়োজন করেন তার বাবা নুরুল ইসলাম ও মা জাহানারা বেগম।

ফেলানী হত্যা মামলার বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্য মানবাধিকার কর্মী, কুড়িগ্রাম জেলা জজকোর্ট পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন বলেন, বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা বাড়াতে বিচারটি দু’দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আশা করা যাচ্ছে, অতিশীঘ্রই যুগান্তকারী রায় দেবেন ভারতের সুপ্রিমকোর্ট। তবে, দ্রুত বিচার হওয়া প্রয়োজন।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কাঁটাতারের বেড়ায় তৎকালীন বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে মৃত্যু হয় ফেলানীর। চাঞ্চল্যকর এ হত্যার বিচার ভারতের উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ালেও ন্যায় বিচার পাননি ফেলানীর স্বজনরা। এ হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচারসহ সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি এ পরিবারের সদস্যদের।

ন্যায় বিচারের আশায় ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে দু’টি রিট পিটিশন দাখিল করেন, যা বর্তমানে বিচারাধীন। এর আগে অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে দুই দফায় বেকসুর খালাস দেন বিএসএফ’র বিশেষ আদালত।

ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, আমার মেয়েকে বিএসএফের অমিয় ঘোষ পাখির মতো গুলি করে মারছে। আমি বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের কাছে এর বিচার দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও ন্যায় বিচার পাইনি। সেই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমার অন্য দুই মেয়ে ও তিন ছেলের লেখাপড়ার খরচ দেওয়ার কথা বলে গেলেও কোনো সহায়তা পাইনি। এখন খুব কষ্ট করে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করাচ্ছি। আমি আমার মেয়ে হত্যার ন্যায় বিচারের আশায় পথ চেয়ে আছি।

ভারতের ১৮১ ব্যাটালিয়নের চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত ফেলানীর মরদেহ কাঁটাতারেই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঝুলে থাকে দীর্ঘ সাড়ে ৪ ঘণ্টা। এ নিয়ে দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকা ফেলানীর মরদেহের ছবি প্রকাশ হলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোতে সমালোচনার ঝড় উঠে।

পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) দাবির মুখে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে বিএসএফ’র বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরু দুই দফা বিএসএফ’র আদালতে সাক্ষী দিলেও ওই বছরেরই ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। এরপর রায় পুনর্বিবেচনায় বিজিবি’র আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আবারও অমিয় ঘোষকে খালাস দেন ভারতের বিশেষ আদালত।

বিএসএফের বিশেষ আদালতে মেয়ে হত্যার ন্যায় বিচার না পেয়ে ২০১৫ সালে ভারতের আইনজীবী অপর্নাভাট ও মানবাধিকার সংগঠন মাসুমের সহায়তায় ভারতের উচ্চ আদালতে রিট করেন নুরুল ইসলাম। এখনও ন্যায় বিচারের আশায় আদালতের দিকে তাকিয়ে আছেন পরিবারটি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৯
এফইএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।