ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পুরস্কৃত বাংলানিউজের ৭ কর্মী, ডেস্ক ও চট্টগ্রাম ব্যুরো

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৯
পুরস্কৃত বাংলানিউজের ৭ কর্মী, ডেস্ক ও চট্টগ্রাম ব্যুরো

ঢাকা: বাংলানিউজের কর্মীরা সব সময় টিম হিসেবে কাজ করে। এটাই প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে বড় শক্তি, এগিয়ে যাওয়ার পাথেয়। এই ‘টিম বাংলানিউজ’র অর্জন কম নয়। সবার আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদটি কোটি পাঠকের কাছে পৌঁছাতে কাজ করে এই ‘টিম বাংলানিউজ’।

তাৎক্ষণিক কোনো ব্রেকিং নিউজ রিপোর্টার স্পট থেকে এক লাইন দিলেন তো ডেস্কে আরেক কর্মী মুহূর্তে সেটা প্রস্তুত করে ফেলেন আপ করার জন্য। অন্য সহকর্মী তাকে বানিয়ে দিচ্ছেন ছবিটি।

নিউজ আপ করা শেষ হতে না হতেই আরেকজন দায়িত্ব নিয়ে দিয়ে দিলেন ফেসবুক শেয়ার।

এভাবে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম মুহূর্তের খবর নিয়ে পৌঁছায় কোটি পাঠকের কাছে। আর পুরো কাজটি যারা সম্পন্ন করেন তাদের মধ্যে প্রায় সবাই তরুণ। সেই তারুণ্যনির্ভর বাংলানিউজ টিমের সাত রিপোর্টার-ফটোসাংবাদিক এবং প্রধান অফিসের ডেস্ক ও চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিসের কর্মীদের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কৃত করেছেন সম্পাদক জুয়েল মাজহার। সম্পাদক জুয়েল মাজহারের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করছেন শামীম খানগত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস ছিল রাজনৈতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ সময়। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই ছিল নিশ্চয়তা-অনিশ্চয়তার দোলাচল। সংবাদকর্মীদের তাই সতর্ক থাকতে হয়েছে প্রতিটি মুহূর্ত। কাজ করতে নিতে হয়েছে নানান ঝুঁকি।  

বাংলানিউজের বয়োজ্যেষ্ঠ নীরব কর্মী স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট শামীম খান। গুরুত্বপূর্ণ আওয়ামী লীগ বিটে নিজের অ্যাসাইনমেন্টের নিউজটা ডেস্কে পাঠাতে দেরি করেন না। দ্রুত তুলতে শুধু মূল তথ্যটি সরবরাহ করেন আগে। আর এভাবেই তৈরি হয়ে যায় অনেক ব্রেকিং নিউজ। রিপোর্টিং টিমের অন্যদেরও বিপদে-আপদে, প্রয়োজনে পাশে থাকেন, বাড়িয়ে দেন সহযোগিতার হাত।  

বাংলানিউজের ঢাকা অফিসে কর্মরত রিপোর্টিং বিভাগের কাছ থেকে প্রতিদিন যতো রিপোর্ট আসে তার সবচেয়ে বেশি আসে সচিবালয় বিটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ইসমাইল হোসেন’র কাছ থেকে। শুধু সংখ্যা বিবেচনায় নয়, যে কোনো মন্ত্রণালয়ে কোনো ঘটনা মানেই ইসমাইল হোসেনকে ফোন। তবে অধিকাংশ সময় ব্রেকিংটা এক লাইন লিখে পাঠাতেই পছন্দ করেন তিনি। দিন-রাত তার নিউজ পাঠাতে কোনো ক্লান্তি নেই। সুযোগ পেলে বিটের বাইরে গিয়েও রিপোর্ট পাঠান তিনি। সেসব নিউজের কোনো কোনোটি ছাড়িয়েছে সোয়া লাখ শেয়ারের মাইল ফলক। এসব নিয়ে নিজের মধ্যে কোনো অহমিকাও নেই তার। নিজের কাজটা সব সময় ঠিকঠাকভাবে করে যেতে চান তিনি। তার পুরস্কারও পেলেন তিনি।

পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বেশ কিছুদিন আগে গুরুতর আহত হয়েছিলেন পিএম বিটের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মহিউদ্দিন মাহমুদ। এখনও শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন ক্ষত। তাতে কী! মুখে হাসি কম নেই তার। সব সময় হাস্যোজ্জ্বল মহিউদ্দিন এর মধ্যেও নিজের পেশাদারিত্ব থেকে দূরে থাকেননি। চেষ্টা করেছেন বিটের রিপোর্ট সবার আগে দেওয়ার। কোনো কারণে রিপোর্ট না দিতে পারলেও বিনয়ের শেষ থাকে না তার। সম্প্রতি সিনিয়র সহকর্মী শামীম খানের সঙ্গে যৌথভাবে দেওয়া একটি ব্রেকিং নিউজ সব মিডিয়ার আগে প্রকাশ করতে সক্ষম হয় বাংলানিউজ। যা ছাড়িয়ে যায় লাখের বেশি শেয়ার। সম্পাদক জুয়েল মাজহারের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করছেন ইসমাইল হোসেন ও মহিউদ্দিন মাহমুদএকাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিট ছিল নির্বাচন কমিশন। এই বিটের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ইকরাম-উদ দৌলা একাই সামলেছেন নির্বাচনের লম্বা সময়। দোতলায় ব্রিফিং তো চারতলায় সাংবাদিক সম্মেলন। একই সময় হয়তো কমিশনে ঢুকেছেন কোনো বড় দলের নেতা। কিন্তু এক হাতে কৌশলে সব নিউজ পাঠিয়ে তিনি বুঝতে দেননি তিনি একা সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে দিয়েছেন অনেক ব্রেকিং নিউজও। তার নিউজের পর বদল হয়েছে সিদ্ধান্ত। অনেক সময় শুনতে হয়েছে হুমকি-ধমকি। সেসব তোয়াক্কা না করেই কাজ করেছেন ইকরাম।

ছাপা পত্রিকা থেকে এসেও অনলাইনে যে খুব দ্রুত মানিয়ে নেওয়া সম্ভব সেটা প্রমাণ করেছেন স্টাফ করেসপন্ডেন্ট তামিম মাজিদ। মাস পাঁচেকের মধ্যে নিজের কর্মদক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। নতুন হিসেবে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের মতো দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিট খুব সফলভাবে সামলেছেন নির্বাচনের কঠিন সময়ে। সময়মতো স্পটে পৌঁছানো, সবার আগে স্পট থেকে নিউজ দেওয়ায় তার জুড়ি নেই। নিউজরুম থেকে কোনো আইডিয়া দিলেও চেষ্টা করেন দ্রুত দিতে। যেকোনো সময় যেকোনো স্পটে যেতে বললেও বিরক্তি নেই বিনয়ী তামিমের। ঐক্যফ্রন্ট বিটে তার দেওয়া নিউজ হাজার হাজার শেয়ার ছাড়াও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সোলায়মান হোসেন শাওন কাজ করছেন মাত্র মাস দুয়েক। এরইমধ্যে নিজেকে প্রমাণ করতে শুরু করেছেন তিনি। ত্বরিৎ গতিতে নির্ভুল স্টোরি লিখতে পারেন শাওন। নিজের সোর্সের বিষয়ে বেশ কনফিডেন্ট। নির্বাচনের আগে তার গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট সাড়া ফেলে বাড়িয়েছে বাংলানিউজের গুরুত্ব। অফিসে ফোন করে অনেকে জানিয়েছেন ধন্যবাদ।

সময়ানুবর্তিতায় ছাড়িয়ে যাওয়া কঠিন সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট জিএম মুজিবুর। কোনো অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে শতভাগ নিশ্চিন্তে থাকা যায় যে সময়ের আগেই তিনি পৌঁছাবেন। অফিসের বাছাই এসব অ্যাসাইনমেন্ট তাই তার ভাগেই যায় বেশি। পাশাপাশি ভিডিও পাঠাতে ভোলেন না। দ্রুত ছবি পাঠাতে ক্যামেরার ছবি মোবাইলে নিয়ে পাঠান। ছবির পাশাপাশি নিউজরুমে ভিডিও পাঠিয়ে সবচেয়ে মধুর যন্ত্রণা তিনিই দেন। অবশ্য দিনশেষে তার কাছে বাহবাই যায়। সম্পাদক জুয়েল মাজহারের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করছেন তামিম মজিদবাংলানিউজের প্রধান অফিসের বাইরে আরেক কর্মচঞ্চল ব্যুরো চট্টগ্রাম অফিস। সেখানকার অভিভাবক ব্যুরো এডিটর তপন চক্রবর্তীর নিরলস পরিশ্রম, সাহস আর দক্ষতায় পুরো অফিসের কর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে কাজ করে চলেছেন। বন্দরনগর চট্টগ্রামের কোনো গুরুত্বপূর্ণ নিউজ ফাঁক গলে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। কর্মীরা সব সময় কাজ করেন আন্তরিকতা নিয়ে। দক্ষ অভিভাবক পেলে কর্মীরাও যে এগিয়ে যাওয়ার বিশুদ্ধ নিশ্বাস পান তার প্রমাণ দিয়ে চলেছেন তপন চক্রবর্তী। এজন্য সিঙ্গেল কাউকে পুরস্কৃত না করে ব্যুরো অফিসের সবাইকে বিশেষ ধন্যবাদ দিয়েছেন সম্পাদক।

সব শেষে আসা যাক বাংলানিউজ ঢাকা অফিসের ডেস্কে কর্মরত কর্মীদের কথায়। ‘ডেস্কে কাজ করলে পিঠে গণ্ডারের চামড়া থাকতে হয়’- একথা মেনে নিয়েই কাজ করতে অভ্যস্ত ডেস্কের কর্মীরা। শুধু নিউজ এডিট করা নয়, ওয়েব সেকশনের কাজও করেন ডেস্কের কর্মীরা নিজেরাই। নির্বাচনের সময় ‘দশভুজা’ হয়ে কাজ করেছেন কর্মীরা। অতিরিক্ত কর্মী না থাকলেও অতিরিক্ত কাজ হাসিমুখে সামলেছে ডেস্ক। সঙ্গে রিপোর্টার-ফটোসাংবাদিক সমন্বয় করার পাশাপাশি অন্য বিভাগের সমন্বয় তো আছেই। রিপোর্টার সঠিক সময়ে রিপোর্ট পাঠালে সেটা দ্রুততম সময়ে আপলোড করাই ডেস্কের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচনের আগে-পরে কাজটি দক্ষভাবে সামলানোয় ডেস্কের সব কর্মীকে সমন্বিতভাবে পুরস্কৃত করেছেন সম্পাদক।  

তিনি জানিয়েছেন, প্রতিমাসেই কাজের বিশেষ স্বীকৃতিস্বরূপ কর্মীদের পুরস্কৃত করবে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ‘মাইলস টু গো’...

বাংলাদেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৯
এইচএ/এএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।