শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষে ‘লুণ্ঠন-সন্ত্রাসের রাজনীতি-অর্থনীতি: সাংস্কৃতিক কর্মীদের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচন সভার আয়োজন করা হয়।
এতে সভাপতির বক্তব্যে বিবর্তনের সভাপতি এএসএম কামাল উদ্দিন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে মুক্ত সাংস্কৃতিক চর্চার যে নেতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তার জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা দায়ী। বাংলাদেশে এত প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও যেসব সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্ত সাংস্কৃতিক চর্চা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে, তার মধ্যে বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র অন্যতম। এসময় তিনি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
মফিজুর রহমান লালটু বলেন, ৪১ বছর ধরে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত আছে। আজকে গোটা দেশের মানুষ একটি ভয়ের সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে দুঃসময়ে নিপতিত হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে এ সরকার একটি অভিনব নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। নির্বাচন হয়ে গেছে একদিন আগেই। এ রকম ঘটনা পৃথিবীতে বিরল। সেই সরকারের অধীনে আমরা আছি। এর আগের সরকারগুলোও কোনো না কোনো কায়দা করে নির্বাচনী বৈতরণী পার করতো। ক্ষমতায় জোর করে বসে থাকতো। মূলকথা হলো জনগণের ভোটের মাধ্যমে যে নির্বাচন হওয়ার কথা, এ দেশে তা অনুপস্থিত।
তিনি বলেন, একাত্তরের পরে যে লুণ্ঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তারই একটি চূড়ান্ত জায়গায় আমরা এসে উপনীত হয়েছি। এখানকার লুণ্ঠনের যে চরিত্র, যে বর্ণনা, সেটি প্রায় অবিশ্বাস্য ধরনের। জনগণের টাকা দিয়ে যেসব রাস্তা, স্থাপনা নির্মাণ করে উন্নয়ন বলা হচ্ছে, এটার ৬০ ভাগ একেবারে লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। ৪০ ভাগ হয়তো ব্যবহৃত হচ্ছে। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি রাস্তা বাংলাদেশে হয়। এ ধরনের লুণ্ঠন পৃথিবীতে আমরা কোথাও দেখতে পাই না। লুটপাট হচ্ছে সর্বত্র। ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কারও কিছু হচ্ছে না। শেয়ারবাজারের অর্থ চলে যাচ্ছে। সাত হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এক কথায় বাংলাদেশ লুণ্ঠনের ক্ষেত্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। এসময় তিনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই উল্লেখ করে আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনা তুলে ধরেন।
আলোচনায় আরও অংশ নেন অধ্যাপক আকমল হোসেন, কাজী ইকবাল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আমিরুল নূজহাত মণীষা। আলোচনা শেষে আলাদাভাবে গণসংগীত, কবিতা আবৃত্তি ও মূকভিনয় পরিবেশনা করেন বিবর্তন সাস্কৃতিক কেন্দ্র, ঢাকা ও রাজশাহীর শিল্পীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, অক্টেবর ১৮, ২০১৯
এসকেবি/টিএ