ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

স্টেশনে যাত্রীকে পিটিয়ে আহত করলো রেল কর্মচারীরা!

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৯
স্টেশনে যাত্রীকে পিটিয়ে আহত করলো রেল কর্মচারীরা!

পাবনা (ঈশ্বরদী): রফিকুল ইসলাম সোহাগ (৪৭)। ঢাকার একটি স্টিল রিরোলিং মিলসের হিসাবরক্ষণ বিভাগে কাজ করেন। সপ্তাখানেক আগে সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি নাটোরের লালপুর বেড়াতে এসেছিলেন। শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের বিশ্রামাগারে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ছেলেকে নিয়ে।

এসময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছেলের সামনেই বাবাকে বেধড়ক কিল-ঘুষি মেরে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা।  পরে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করেন।



ঈশ্বরদী রেলওয়ে জিআরপি পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন হামলাকারী ওই তিনজনই রেলওয়ের কর্মচারী। তবে নামপরিচয় জানা যায়নি।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর পৌনে দু’টার দিকে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের ৩ নম্বর প্লাটফর্মে এ ঘটনা ঘটে।  

আহত ট্রেনযাত্রীর ছেলে ঢাকা মিতালি বিদ্যাপীঠের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রিয়াদুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে  বাংলানিউজকে বলে, বাবার সঙ্গে গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেড়াতে এসেছিলাম। শনিবার দুপুরে দেড়টার দিকে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের ৩ নম্বর প্লাটফর্মের যাত্রীদের বসার বিশ্রামাগারে আমার কোলে মাথা রেখে বাবা একটু শুয়েছিল। এসময় এক অপরিচিত ছেলে এসে বলেন, এখানে শুয়ে আছেন কেন? উঠুন।  এসময় আমি বাবাকে এই কথা বলার পর বাবা উঠে অপরিচিত ওই ছেলেকে বলেন, কী হয়েছে তোমার? সমস্যা কী? যদি বসো পাশে বসো। জায়গা আছে তো। একথা বলাতে বাবার সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক করে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এসময় আমি বাধা দিলে কিল-ঘুষি আমার গায়েও লাগে। পরে বাবাকে তার একবন্ধু হাসপাতালে নিয়ে যায়।  

ওই কিশোরের অভিযোগ, খানিক দূরেই পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল, কিন্তু কোনো প্রতিবাদ করেনি। তবে এবিষয়ে পুলিশের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আহত ট্রেনযাত্রী রাকিবুল ইসলাম সোহাগ বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার সময় আমি  তাদের কাছে জানতে চেয়েছি, কী হয়েছে? বসবে কী না? সামনের ফাঁকা জায়গা আছে বসো? এ সময় তুমি করে বলেছি, এটাই ছিল আমার অপরাধ।

ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে প্রত্যক্ষদর্শীরা বাংলানিউজকে জানায়, প্রথমে একটি ছেলে এসে ওই ট্রেন যাত্রীকে উঠে বসতে বলে। এসময় ওই ট্রেনযাত্রী উত্তেজিত হয়ে, অপরিচিত ছেলেটিকে বলেন, এই কী হয়েছে? ঘুমিয়েছিলাম! আমাকে কেন বিরক্ত করলি? এই তোর বাসা কোথায়।  একথা বলাতে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও কিল-ঘুষি শুরু হয়। এসময় আরও দু’জন এসে কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে জিআরপি রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তখন ওই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।  

এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের রেলওয়ে সুপারিনটেনডেন্ট(এসএস) মহিউল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এ বিষয়ে কিছু শুনতে পাইনি। আর কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে ঘটনাস্থলে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। অনুসন্ধান যদি করা যায়, প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।  

ঈশ্বরদী রেলওয়ে জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবায়ের আরেফিন বাংলানিউজকে জানান, এ বিষয় আহত ট্রেনযাত্রী লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।