ঝিনাইদহ জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হামিদুর রহমানের গ্রাম মহেশপুর উপজেলার খর্দ্দখালিশপুর। এ গ্রামের সন্তান হামিদুর রহমান।
মৌলভীবাজারের ধলাইতে ছিল পাক বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি। কৌশলগত দিকে দিয়ে এ ঘাঁটি দখল জরুরি হয়ে পড়ে মুক্তিবাহিনীর জন্য। মুক্তিবাহিনী পাকসেনা ঘাঁটি আক্রমণ করে দখল করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২৮ অক্টোবর ধলাই পাকসেনা ঘাঁটি আক্রমণ করে মুক্তি বাহিনী। তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। দু’টি মেশিনগান পোস্ট থেকে তুমুল গুলিবর্ষণ করতে থাকে পাকিস্তানি সেনারা। মেশিনগান পোস্ট ধ্বংসের দায়িত্ব পড়ে হামিদুর রহমানের ওপর। পরে এ বীর এগিয়ে যান এবং ধ্বংস করেন মেশিনগান পোস্ট। মুক্তিবাহিনীর দখলে আসে পাকিস্তানি সেনাঘাঁটি। শত্রুর গুলিতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন।
তার সহযোদ্ধারা মরদেহ ভারতে নিয়ে ত্রিপুরার আমবাশা এলাকায় সমাহিত করেন। দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব দেয় হামিদুর রহমানকে। ২০০৭ সালে এ বীরের দেহাবশেষ ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনরায় সমাহিত করা হয়েছে।
১৯৮১ সালে তৎকালীন সরকার হামিদুর রহমানের মায়ের জন্য বসতঘর তৈরি করে দেয়। পরিবারের জন্য আরেকটি দোতলা বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। হামিদুর রহমান যাদুঘর ও লাইব্রেরির সামনে একটি ইকোপার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিন্তু এটি বাস্তবায়ন হয়নি।
সরকারি শহীদ সিপাহী বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আমিনুল হক দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামিদুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী পালনের আহ্বান জানান।
একইসঙ্গে সোমবার হামিদুর রহমানের গ্রামের বাড়ি মহেশপুর উপজেলার খর্দ্দখালিশপুরে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
কেএআর/এসএইচ