ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

চালককে ফাঁসি দিলেই দুর্ঘটনা বন্ধ হবে না: শাজাহান খান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৯
 চালককে ফাঁসি দিলেই দুর্ঘটনা বন্ধ হবে না: শাজাহান খান সংবাদ সম্মেলনে শাজাহান খান। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: চালক বা শ্রমিককে সাজা কিংবা ফাঁসি দিলেই সড়কে দুর্ঘটনা বন্ধ হবে না। যারা এ অলিক কল্পনা করেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। পাশাপাশি নতুন সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮তে কিছু অসামঞ্জস্য রয়ে গেছে। মালিক-শ্রমিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আপত্তি আছে এমন ধারাগুলো বিবেচনায় নেওয়া হোক।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও সংগঠনটির কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান।

তিনি বলেন, রেলপথের ওপর যখন পথচারী মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে, এর জন্য কি রেলগাড়ির চালক দায়ী হয়? তাহলে সড়কে দ্রুতগামী যানবাহনের সামনে কেউ মোবাইল ফোন কানে আনমনা হয়ে সড়ক পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটালে এর দায়ভার কি চালককে নিতে হবে? 

শাজাহান খান বলেন, নিরাপদ সড়ক আমাদের সবার দাবি।

দুর্ঘটনায় শুধু পথচারী নয়, চালকও নিহত হয়। অন্যায় হলে শাস্তি হবে। তাই বলে অন্যের দোষ সব চালক-শ্রমিক কেন নেবে?

তিনি বলেন, সম্প্রতি দুর্ঘটনার কারণে দেশের সর্বোচ্চ আদালত পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের কোটি কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রায় দিয়েছেন। ঢালাওভাবে এ ধরনের রায় কোনো দেশে নেই। এতে মালিক-শ্রমিক গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। এসব রায় সড়কে কতটা শৃংখলা ফিরিয়ে আনবে তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শুধু শাস্তির ভয় দেখিয়ে সড়কে শৃংখলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। বরং সড়ক আইন যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের প্রস্তাবিত ১১১টি সুপারিশের বাস্তবায়ন জরুরি।

সাবেক নৌমন্ত্রী বলেন, সরকার সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিলেও এখনো বিধি প্রণয়ন করা হয়নি। বিধি প্রণয়ন ছাড়া আইন প্রয়োগে জটিলতার অবসান কীভাবে হবে? সবার সচেতনতার ওপর নির্ভর করবে দুর্ঘটনা। সবাই সচেতন হলে দুর্ঘটনা কমে আসবে। শুধু শাস্তির ভয় দেখিয়ে কোনো সমাধান আসবে না।

নতুন সড়ক আইন প্রসঙ্গে পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের এই নেতা বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮তে কিছু অসামঞ্জস্য রয়ে গেছে। বিষয়গুলো আমরা সেতুমন্ত্রীকে জানালে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহ্বায়ক এবং আইনমন্ত্রী ও রেলপথ মন্ত্রীকে সদস্য করে কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে আমাদের কয়েকটি প্রস্তাব জানালে তারা এর যৌক্তিকতার সঙ্গে একমত হন, যা পরে বিবেচনায় আনার কথা বলা হয়েছে। এ আইনে মালিক-শ্রমিকের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক ধারা রয়েছে যেগুলো নিয়ে আপত্তি রয়েছে। সেসব ধারা বিবেচনায় নেওয়ার দাবি জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে বেশ কিছু দাবি জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সড়ক দুর্ঘটনা মামলাকে জামিনযোগ্য করতে হবে, তদন্ত ছাড়া মামলা ৩০২ ধারায় দায়ের করা যাবে না, মামলাগুলো পুলিশ ও দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে তদন্ত করতে হবে, সড়কে দুর্ঘটনা রোধে প্রস্তাবিত ১১১টি সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে এবং লোডিং পয়েন্টে ওভারলোড চেক করার ব্যবস্থা করতে হবে।

এসময় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৯
ইএআর/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।