এর মধ্যে নাম এসেছে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও মুক্তিযোদ্ধারও। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিজয় দিবসের আগে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকার, আলবদর, আল-শামসসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
তালিকার প্রথম পর্বে আদমদীঘি উপজেলার ৩১ জনের নাম রয়েছে। তালিকায় ১৩২-১০৪৩-২সি-১৩৮/৭৩-এ ১ নম্বরে রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে বিএনপির সাবেক এমপি আবদুল মোমিন তালুকদার খোকাসহ তার তিনভাইয়ের নাম রয়েছে।
বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) আসনের সাবেক এমপি ও বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খোকার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা চলমান। তার বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে তিনি পলাতক রয়েছেন।
রাজাকারের তালিকায় ১৮ নম্বরে রয়েছে- মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এমপি কছিম উদ্দীন আহম্মেদ, ১৯ নম্বরে আওয়ামী লীগের সাবেক এমএনএ (মেম্বার অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি) মজিবর রহমান (আক্কেলপুর), ৪ নম্বরে মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার মনছুর আলী, ৯ নম্বরে আওয়ামী লীগ নেতা তাহের উদ্দীন সরদার, ১৬ নম্বরে রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা জাহান আলী, ৩ নম্বরে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আমিরুল ইসলাম, ৭ নম্বরে আওয়ামী লীগ নেতা ফয়েজ উদ্দীন আহম্মেদের নাম রয়েছে। তারা সবাই স্বাধীনতার পক্ষের এবং মুক্তিযুদ্ধেও অংশ নিয়েছেন।
স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম দেখে অবাক হয়েছেন আদমদীঘি তথা বগুড়ার মানুষ।
এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবির খান বাংলানিউজকে বলেন, রাজাকারের তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে আব্দুল মতিন তালুকদার খোকা ও তার তিন ভাইয়ের নাম। তাদের বাবাও প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের নাম রাজাকারের তালিকায় আসায় খুবই দুঃখজনক। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকায় নাম থাকা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক এমপি কছিম উদ্দীন আহম্মেদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মনছুর আলী, জাহান আলীর বিষয়ে তিনি বলেন, তারা সবাই মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েক বছর পর মুক্তিযোদ্ধা কছিম উদ্দিনকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে।
‘এরপর ক্ষমা চেয়ে ও ভুলবশত তাকে হত্যা করা হয়েছে-মর্মে লিফলেট সারা উপজেলাজুড়ে বিতরণ করে সন্ত্রাসীরা। এখন স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকায় এই মুক্তিযোদ্ধাদের নাম থাকা মানে সমস্ত মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্যান করা। অবিলম্বে এ তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়ার দাবি জানাই। ’
একই সঙ্গে প্রকৃত রাজাকারদের নির্ভুল তালিকা প্রণয়নের পাশাপাশি যারা জীবিত রয়েছে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি করেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
কেইউএ/এমএ