ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঘন কুয়াশার চাদরে মুড়ে আছে রাজশাহী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৯
ঘন কুয়াশার চাদরে মুড়ে আছে রাজশাহী আগুন জ্বালিয়ে ঠাণ্ডা তাড়াচ্ছেন ছিন্নমূল মানুষেরা। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: পৌষের প্রথম সপ্তাহে হঠাৎ করেই এবার শীতের দাপট বেড়েছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহীতে। কাঁচের মতন স্বচ্ছ শিশিরবিন্দুগুলো ভর করেছে সবুজ প্রকৃতিতে। শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। টানা তিনদিন রাজশাহীর তাপমাত্রা অবস্থান করছিলো এক অঙ্কে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে বেড়ে ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে।

কিন্তু শীতের প্রকোপ কমেনি। ভোর থেকে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে রাজশাহী মহানগরী। ভোরে সূর্যোদয় হলেও তার কিরণ বিকোশিত হতে পারেনি শীতল এই প্রকৃতিতে। তাই সকাল যখন ১০টা তখনও রাজশাহীতে বিরাজ করছে ভোরের আভা। ভোর থেকে ঘন কুয়াশার কারণে আশপাশের কিছু দেখা যাচ্ছে না। কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে গ্রামের পাকা ধানের ক্ষেত, শহরের পিচঢালা পথ।

আবহাওয়া কার্যালয় বলছে, শনিবার রাজশাহীতে সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে। তবে ভোর থেকে কুয়াশার চাদরে মুড়ে আছে রাজশাহী।   পৌনে ৯টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি।

বর্তমানে দৃষ্টিসীমা ২শ’ মিটারের নিচে নেমে এসেছে। ভোর থেকে প্রধান সড়কগুলোতে হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। আর হযরত শাহ মখদুম (রহ.) বিমানবন্দরেও বিমান ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে, বেলা যতই বাড়ছে ঘন কুয়াশাও যেন আড়মোড়া দিয়ে প্রকৃতির সব কিছুকে ততই কোলের মধ্যে টেনে নিচ্ছে। এর ওপর বেড়েছে শীতের তীব্রতা। টানা চারদিন হলো সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের তাপ না থাকায় হাড় কাঁপানো শীতে কাবু হয়ে পড়ছেন শহরের পথে-ঘাটে থাকা ছিন্নমূল মানুষ।

জানতে চাইলে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আনোয়ারা বেগম বাংলানিউজকে জানান, ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। এজন্য আজ শীত একটু বেশিই অনুভূত হচ্ছে। তবে তাপমাত্রা কমেনি। শনিবার ভোর ৬টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে শুক্রবার রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে তাপমাত্রা বেড়েছে, কমেনি। আজ সকাল ৬টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ।

এক প্রশ্নের জবাবে রাজশাহী আবহাওয়া কার্যালর ভারপ্রাপ্ত আবহাওয়া কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ কামলা উদ্দিন বলেন, এ সময় কুয়াশা পড়া অনেকটায় স্বাভাবিক। সাধারণত এই কুয়াশা কাটলে শীতের তীব্রতা বাড়ে। ফলে শীত আরও বাড়বে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে এমন ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকলে কৃষিতে ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। এই সময়টায় এসে কুয়াশার কারণে বরাবরই বোরো বীজতলা ও রবি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে বোরোতে কোল্ড ইনজুরি ও আলুতে লেটব্লাইট (পচন) দেখা দেয়। তবে পরস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

রাজাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামছুল হক বাংলানিউজকে বলেন, এবছর শুরু থেকেই শীতের প্রকোপ কম। তবে মাঝ সময়ে এমন আবহাওয়া রবি শস্যের জন্য কাল হয়ে ওঠে। তাই কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সতর্ক রয়েছেন। এখন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পরিদর্শন করছেন। ফসলকে নিরাপদ রাখতে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

এছাড়া কৃষকরাও আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন হয়ে উঠেছেন। মোবাইল অ্যাপস ও হট লাইনের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টাই কৃষি তথ্যসেবা নিচ্ছেন। সেই মতে ফসলের পরিচর্যাও করছেন বলে জানান রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৯
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।