মাহানন্দা নদী হিমালয় থেকে বয়ে আসা বরফগলা পানি দিয়েই দু’দেশকে ভাগ করেছে। আর এই সীমান্ত নদী মহানন্দায় বরফগলা পানিতে নেমে হাজার-হাজার শ্রমিক নুড়ি-পাথর উত্তোলন করছে।
জানা যায়, দেশ ভাগের পর থেকেই তেঁতুলিয়া উপজেলার দরিদ্র শ্রমিকেরা নদী থেকে নুড়ি-পাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাই উপার্জনের অন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এই কনকনে শীতেও শ্রমিকরা নুড়িপাথর উত্তোলন করতে নেমে পড়ছে নদীতে।
সরেজমিনে রোববার (২২ ডিসেম্বর) ঘুরে দেখা গেছে, নদীর ১৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শ্রমিকরা দলবেধে বাতাসে ফুলানো গাড়ির চাকার টিউব, লোহার চালনি, পাথর শনাক্তের জন্য লোহার রড নিয়ে বরফগলা পানিতে নেমে নুড়িপাথর উত্তোলন করছেন। পরে পানিতে ভাসানো টিউবের ঢাকিতে করে সে পাথর দু’কাঁধে ভারে করে তীরে এনে জমা করেন। সন্ধ্যায় মহাজনের কাছে বিক্রিলব্ধ টাকায় জোটে আহার।
জানা যায়, প্রকৃত অর্থে দরিদ্র এই মানুষগুলোর কাছে এখনো পৌঁছায়নি কোনো শীতবস্ত্র। জীবনযুদ্ধে এ অসহায় মানুষগুলো ঝুঁকি নিয়ে সীমান্ত নদীর বরফগলা পানিতে দিনভর যুদ্ধকরে কোনো মতে বেঁচে আছে। অসহায় এসব মানুষেরা রাতযাপনের জন্য শীতবস্ত্র হিসেবে বিত্তবানদের দেওয়া কিছু বস্ত্রের দিকে চেয়ে আছেন।
তেঁতুলিয়ার মোমিনপাড়া এলাকার পাথর শ্রমিক হাসিবুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ঝড়-বৃষ্টি কিংবা শৈত্যপ্রবাহ সব কিছুই উপেক্ষা করে আমাদের জীবিকার খোঁজে প্রতিদিন নদীতে আসতে হয়।
আবু সাঈদ নামে আরেকজন জানান, এত কষ্টের পরেও সব উপার্জনে জীবিকার খোঁজে নদীতে নামছি। এসময় বিত্তবানরা অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছে না, আমাদের দিন কামাই করে রাতে খেতে হয়। কিন্তু এই নদীতে নামতে গেলে বিভিন্ন বাধার সম্মুক্ষিণ হতে হচ্ছে। একদিকে বিএসএফের বাধা অন্যদিকে বিজিবির।
দুঃখের সঙ্গে শেষ কথাটি জানালেন হবিবর নামে আরেক শ্রমিক। গরিব অসহায় হিসেবে আমাদের বেঁচে থাকাটাই বড় কষ্ট ও দুঃখের।
এদিকে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবং একই দিনে বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
এসএইচ