ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নাটোরে নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯
নাটোরে নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু 

নাটোর: সরকারিভাবে সারাদেশে একযোগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অংশ হিসেবে নাটোরে বিভিন্ন নদ-নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। 

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের নিচাবাজারস্থ হেমাঙ্গিনী সেতুর কাছ থেকে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়।

জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ শহরের হেমাঙ্গিনি ব্রিজ এলাকায় এ উচ্ছেদ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

 

অভিযানের শুরুতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নিযুক্ত শ্রমিকরা হ্যামার দিয়ে চিহ্নিত এলাকা ঠিক রেখে অবৈধ স্থাপনাগুলো ভাঙতে শুরু করে। এসময় দখলদাররা তাদের স্থাপনা স্ব-উদ্যোগে সরিয়ে নিতে থাকে।  

এসময় উপস্থিত ছিলেন- নাটোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সাজেদুর রহমান খান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক গোলাম রাব্বি, নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছা. শরীফুন্নেছা, নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম, উচ্ছেদের নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আরডিসি মো. আদনান চৌধুরী, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী আল আসাদ প্রমুখ।  

 এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, আজ নদীর ১৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। জরিপ ও নোটিশ প্রদানের পরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ কার্যক্রমে ব্যাপক জনমত তৈরি হওয়ায় অনেকেই স্বেচ্ছায় তাদের বহুতল ভবন ভেঙে ফেলছেন। স্বেচ্ছায় স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া ইতিবাচক হিসেবে এ কার্যক্রম চলমান থাকতে ও অব্যাহত রাখতে প্রভাব ফেলবে।

তিনি আরও বলেন, এর আগে নদীগুলোর জরিপ কাজ সম্পন্ন করে সীমানা চিহ্নিতকরণ ও অবৈধ দখলদারদের তালিকা প্রনয়ণ করে তাদের অবৈধ স্থাপনা স্বেচ্ছায় সড়িয়ে নিতে নোটিশ দেওয়া হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় জেলা ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন এ কাজ সম্পন্ন করছে।

এদিকে জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নারদ নদের নাটোর সদর উপজেলা এলাকা, বড়াল নদীর বড়াইগ্রাম উপজেলা এলাকা এবং নন্দকুজা নদীর গুরুদাসপুর উপজেলা এলাকায় একযোগে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য এলাকায় অভিযান চলবে। উচ্ছেদ অভিযানকে সফল করতে নদী রক্ষা কমিটির সভায় প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা প্রনয়ণ করা হয়েছে।  

নাটোর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু আহসান বাংলানিউজকে বলেন, জরিপের মাধ্যমে নদীর সীমানা চিহ্নিত করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের নিয়মিত নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। ওই নোটিশের প্রেক্ষিতে তারা সাতদিনের মধ্যে তাদের স্থাপনা সড়িয়ে না নিলে ‘লোকাল অথরিটি ল্যান্ড অ্যান্ড বিল্ডিংস অর্ডিন্যান্স ১৯৭০’ এর ৭ ধারা অনুযায়ী ফৌজদারি মামলা দায়ের ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা করা  হবে।

নদীর পাড়ের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্যে সহায়ক সব কার্যক্রম নিয়মিতভাবে করা হচ্ছে বলে জানান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম।

নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নাটোর জেলাসহ এ অঞ্চলের নদীকে সচল করতে বড়াল বেসিন ভিত্তিক এক হাজার ৩৫ কোটি টাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রনয়ণ করা হয়েছে। এর মধ্যে নারদ নদের নাটোর শহরের পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে নদীর বাঁধ, ওয়াকওয়ে, সিটিংপ্লেস, বনায়নসহ সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন পর্যায়ে গেলে নারদসহ নদীগুলো প্রাণ ফিরে পাবে।

নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছা. শরীফুন্নেছা বাংলানিউজকে বলেন, নদীর সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর নিজস্ব সীমানায় ফিরিয়ে আনা হবে। নিরবচ্ছিন্নভাবে পর্যায়ক্রমে সব অবৈধ স্থাপনাই উচ্ছেদ করতে সব রকমের প্রশাসনিক পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।  

তিনি আরও জানান, নারদ নদীতে আজকের এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার ফলে হেমাঙ্গিনি ব্রিজ থেকে কানাইখালী জেলাপাড়া পর্যন্ত প্রায় তিন একর নদীর জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত হবে।

আর সিএস নকশা হিসেবে পৌর এলাকার চিহ্নিত ১৫টি স্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এ উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘন্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।