ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘ব্লু-ইকোনোমির বিকাশে ভূমিকা রাখবে উপকূলীয় এলাকা’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৯
‘ব্লু-ইকোনোমির বিকাশে ভূমিকা রাখবে উপকূলীয় এলাকা’ সেমিনারে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকসহ অন্যরা।

খুলনা: ‘বাংলাদেশের ৪৭ হাজার ২০১ বর্গ কিলোমিটারজুড়ে উপকূলীয় এলাকা। বর্তমানে প্রতিবছর বঙ্গপোসাগর থেকে ৬০ লাখ মেট্রিক টন মৎস্য আহরণ করা হয়। আগামীদিনে সুনীল অর্থনীতি (ব্লু-ইকোনোমি) নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে। এই অর্থনীতির বিকাশে এখন থেকেই পরিকল্পিত কাজ করতে হবে।

বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার মানুষ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এজন্য উপকূলীয় এলাকার পানীয় জলের সংকট, সুন্দরবন দূষণ, মৎস্যজীবী-বনজীবীদের সচেতন করা, তাদের অর্থনৈতিকভাবে সামলম্বী করে তুলতে হবে।

  উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশে উন্নীত করতে সমুদ্র অর্থনীতি আমাদের স্বপ্নের হাতছানি দিচ্ছে। ’

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) খুলনাস্থ নৌবাহিনী ঘাঁটি তিতুমীর ফেয়ারওয়ে হলে ‘সুনীল অর্থনীতির বিকাশে উপকূলীয় জনপদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেরিটাইম রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিমরাড) দিনব্যাপী এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। দেশের মেরিটাইম খাতে গবেষণাভিত্তিক অন্যতম প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেরিটাইম রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিমরাড) এ সেমিনারের আয়োজন করে।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উপকূলবাসীর উন্নয়নের লক্ষ্যে বিমরাড’র তাৎপর্যপূর্ণ উদ্যোগ এবং গবেষণা, সক্ষমতা ও সচেতনতা তৈরিতে সক্রিয় অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া সেমিনারে চারটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সেলিনা আহমেদ, ড. মো. ওয়াসিউল ইসলাম ও ড. নাজমুস সাদাত এবং এওএসইডি’র নির্বাহী পরিচালক শামিম আরফিন।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বহুমাত্রিক কর্মকাণ্ড ও জনজীবনের চিত্র তুলে ধরা এবং সমস্যাবলী পর্যালোচনা ছিলো সেমিনারের প্রধান উদ্দেশ্য।

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে পর্যটনের মূলকেন্দ্র হিসেবে এটির সম্ভাবনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ সম্পর্কে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া, দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতিকে লালন ও বিকাশের বিষয়টিও সেমিনারে আলোচিত হয়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উপকূলবাসীর নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিভিন্ন দিক নিয়ে উপকূলীয় সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্টদের মতবিনিময়ধর্মী দু’টি অধিবেশন থেকে বিভিন্ন গঠনমূলক পরামর্শ ও প্রস্তাবনা উঠে আসে।

সেমিনারে বিমরাড চেয়ারম্যান সাবেক নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ বলেন, সচেতনতা তৈরি, গবেষণা, উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, শিক্ষাপ্রদান, মতবিনিময় এবং নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে সমুদ্র সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে ‘বিমরাড’জাতির উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশা পূরণ করবে।

বিমরাড ভবিষ্যতে বিশ্বের মেরিটাইম জনগোষ্ঠীর সেরা কেন্দ্রভূমি হয়ে উঠবে বলে তিনি আশাবাদী।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বিমরাড ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এতে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সুনীল অর্থনীতির উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণ ও বাংলাদেশের ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ সংক্রান্ত গবেষণা ও সক্ষমতা তৈরিতে সহযোগিতা এবং যৌথ তৎপরতার বিষয়টি উপস্থাপিত হয়েছে।

সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুনীল অর্থনীতির বিভিন্ন সেক্টরের অংশীজন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের কর্মকর্তারা, সমুদ্র বিষয়ক গবেষক, একাডেমিশিয়ান, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা, ব্যবসায়ীরা, উপকূলীয় ও বনাঞ্চলের প্রতিনিধিরা, উদ্যোক্তা, উপকূলীয় সাংবাদিক এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় একটি সেবাধর্মী ও অলাভজনক সামুদ্রিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গত ৩ জুলাইয়ে যাত্রা শুরু করে। দেশের সমুদ্র বিষয়ে দেশের তরুণ সমাজকে সচেতন এবং আকৃষ্ট করার পাশাপাশি সমুদ্র সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি এবং ব্লু-ইকোনমি, সমুদ্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তাসহ সামুদ্রিক সব বিষয়ে গবেষণামূলক কারিগরি ও নীতিনির্ধারণী সুপারিশ প্রণয়ন প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪ , ২০১৯
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।