ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় দুর্ঘটনায় নিহত ৫ জনের দাফন সম্পন্ন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৯
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় দুর্ঘটনায় নিহত ৫ জনের দাফন সম্পন্ন দাদপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিহত তিনজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

রাজশাহী: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত পাঁচ জনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। নিহত পাঁচ জনের মধ্যে তিন জনের মরদেহ রাজশাহীর বাঘায় এবং দুই জনের মরদেহ ঝিনাইদহে দাফন করা হয়।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) ওই পাঁচ মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

রাজশাহীর বাঘায় দাফন করা হয়েছে- নিহত সিএনজিচালক রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সরের ঘাট এলাকার দবির মোল্লার ছেলে জালাল উদ্দিন, একই এলাকার মেজবাহ উদ্দিন মাসুদ এবং মেজবাহ উদ্দিনের মা মাহমুদা বেগমের মরদেহ।

এছাড়া, একই সময়ে নিহত মাসুদের স্ত্রী রুনা খাতুন ও তাদের সাত মাসের শিশু সন্তান ঈব্রাহীম হোসেন রোজদির মরদেহ দাফন করা হয়েছে তার শ্বশুর বাড়ি ঝিনাইদহে।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একই গ্রামের তিন জন এবং একই পরিবারের দুই জনের মরদেহ রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দুরদুরিয়া গোরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে বেলা ১১টার দিকে দাদপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিহত তিন জনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ জানাজায় মানুষের ঢল নামে। এ সময় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন সরেরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নিহত মাসুদের বাবা আব্দুস সালাম।

রাজশাহী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্রী মাহবুবা আক্তার রেশমীর বিয়ের দাওয়াত দিয়ে ফেরার সময় নির্মম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন একই পরিবারের চার সদস্য। এছাড়া, নিহত সিএনজিচালকও একই গ্রামের বাসিন্দা।

রেশমীর বিয়ের দিন আগামী শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর)। স্ত্রী ও সাত মাসের শিশু সন্তান ছিল শ্বশুর বাড়িতে। তাই বিয়ের আয়োজনের জন্য স্ত্রী ও সন্তানকে আনতে গিয়েছিলেন বেসরকারি একটি সংস্থায় কর্মরত মেজবাহ উদ্দিন মাসুদ।

উদ্দেশ্য ছিল স্ত্রী-সন্তানকে বাড়িতে নিয়ে আসার পাশাপাশি শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে ছোটবোনের বিয়ের দাওয়াত দেওয়া। এজন্য সঙ্গে করে মা মাহমুদা বেগমকেও শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন মাসুদ। দাওয়াতও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ছোটবোনের বিয়ের দাওয়াত দিয়ে স্ত্রী, একমাত্র সন্তান ও মাকে সঙ্গে নিয়ে আর নিজ বাড়িতে ফেরা হয়নি মাসুদের।  

এর আগেই ঘাতক ট্রাক কেড়ে নিলো একই পরিবারের চারজনের প্রাণ। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা ২০মিনিটের দিকে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের ভেড়ামারা পার-হাউজ যাত্রী ছাউনির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। কোনো সান্ত্বনার বাণী আজ আর কান্না থামাতে পারছে না স্বজনহারা এ পরিবারের। প্রাণপ্রিয় স্ত্রী, একমাত্র ছেলে, নাতি ও পুত্রবধূকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে গেছেন স্কুল শিক্ষক আব্দুস সালাম।

হৃদয়বিদারক এই দুর্ঘটনায় পর বিয়ের বাড়িতে শুরু হয়েছে শোকের মাতম। মেয়ের বিয়ের মাত্র তিনদিন আগে পরিবারের সবাইকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছেন এ স্কুল শিক্ষক।

নিহত একই পরিবারের চারজনসহ পাঁচজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৯
এসএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।