বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। পরে দুপুরে শহরের দু’টি প্রধান গির্জায় কেক কেটে উৎসব সমাপ্ত করা হয়।
বড়দিনকে ঘিরে বঙ্গবন্ধু সড়কের সাধু পৌলের গির্জা ও সিরাজউদ্দৌলা সড়কের ব্যাপ্টিস্ট চার্চকে সাজানো হচ্ছে বর্ণিল সাজে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ও জেলা পুলিশ সুপারের (ভারপ্রাপ্ত) পক্ষ থেকে দু’টি গির্জায় উপহার হিসেবে কেক পাঠানো ও কাটা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহর ছাড়াও ফতুল্লার সস্তাপুর, পাগলা, দেলপাড়া, বন্দরের লক্ষ্মণখোলা, সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড, সদর থানার গোগনগর এলাকায় খ্রিস্টানদের বাস। তাদের বেশিরভাগই চাকরিজীবী। বিশেষ করে গার্মেন্টস, বায়িংহাউস, চায়নিজ রেস্টুরেন্ট ও বিউটিপার্লারে কর্মরত। নারায়ণগঞ্জে ক্যাথলিক ও ব্যাপটিস্ট ছাড়াও খ্রিস্টানদের কয়েকটি ক্ষুদ্র সম্প্রদায়ের লোকও রয়েছে। তাদের জন্য নারায়ণগঞ্জে কোনো চার্চ নেই। তারা বাসায় কিংবা কার্যালয় অথবা চায়নিজ রেস্টুরেন্টে বড়দিন উপলক্ষে অস্থায়ী গির্জা তৈরি ও ক্রিসমাস-ট্রি সাজিয়ে থাকে।
সাধু পৌলের গির্জার সাধারণ সম্পাদক পিন্টু পলিকাপ পিউরিফিকেশন বলেন, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী দু’টি গোত্রের (ক্যাথলিক ও ব্যাপ্টিস্ট) জন্য নারায়ণগঞ্জ শহরে দু’টি গির্জা রয়েছে। ক্যাথলিকদের জন্য শহরের ১৩৫ বঙ্গবন্ধু সড়কে সাধু পৌলের গির্জা ও ব্যাপ্টিস্টদের জন্য সিরাজউদ্দৌলা সড়কে ব্যাপ্টিস্ট চার্চ। ব্যাপ্টিস্ট চার্চটি ১৮৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত। চার্চ প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে রেভারেন্ড রামচরণ ঘোষের নাম বিশেষভাবে উল্লেযোগ্য। এ চার্চে ধর্মীয় আচার ছাড়াও বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজকর্মও হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে চিকিৎসা সেবা, মাতৃসদন, শিক্ষাদান উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে সাধু পৌলের গির্জা ১৯৪৯ সালে ইতালিয়ান ফাদার জন সে ক্যাথলিক গির্জা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি গির্জার নাম দেন সাধু পৌলের গির্জা।
সাধু পৌলের গির্জার ফাদার এলিয়াস হেম্ব্রম জানান, দেশ ও বিশ্বের শান্তি ও মঙ্গল কামনার মধ্য দিয়ে আমাদের প্রার্থনা পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। এখন যে যার যার মতন উৎসব উৎযাপন করবে।
এদিকে সকালে সাধু পৌলের গির্জায় দেখা যায়, সেখানে অস্থায়ীভাবে সাজানো গোশালা ও ক্রিসমাস-ট্রিসহ (আলোকসজ্জিত গাছ) গির্জার বিভিন্ন আলোকসজ্জার সঙ্গে ছবি তুলছেন সেখানে আসা বিভিন্ন বয়সিরা। শিশু ও তরুণ-তরুণীদের মধ্যে উৎসবের একটু বাড়তি আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। প্রার্থনার পর সবাই একে অপরের বাড়ি ঘুরে বেড়ানো ও শহরের বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত বড়দিন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে গিয়ে আনন্দ করার মধ্য দিয়ে দিনটি অতিবাহিত করবেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক (ডিআইও-২) শফিউল আজম জানান, ইতোমধ্যে দু’টি গির্জায় পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে, রয়েছে সাদা পোশাকে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিও। বড় দিনকে ঘিরে পুরো শহরেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে শহরের আলাদা পাঁচটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে, উৎসবকে শান্তিপূর্ণ করতে জেলা পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৯
এএটি