শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) জাতীয় জাদুঘরের সামনে নবীন ও প্রবীণদের সমন্বয়ে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে তারা এ দাবি করেছে।
ইতিহাসের বৃহত্তর স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্তদের তালিকা প্রকাশ ও ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিষদ এবং প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত ও পরাজিত বাঙালি সদস্যদের মধ্যে যারা স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা পালন করেছে তাদের তৎকালীন রাজনৈতিক পরিচয়সহ সব তথ্য-উপাত্ত জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবিতে প্রজন্মের চেতনা এ মানববন্ধন করে।
কর্মসূচির শুরুতে জনযোদ্ধা ডা. পেমাঙ্কর রায়ের মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। কবি সাইদ তপু ‘জাগো আরেক বার’ শিরোনামে তার একটি স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় গত ১৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত তালিকাটি কোনোভাবেই রাজাকারের তালিকা নয়। অপ্রিয় হলেও সত্য- মূলত ওই তালিকাটি ছিল ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্তদের অংশবিশেষ মাত্র। অথচ মন্ত্রণালয় রাজাকারদের তালিকা বলে প্রকাশ করেছে! বিষয়টি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এর দায়-দায়িত্ব কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এড়াতে পারে না। প্রকাশিত ওই তালিকায় যাদের নাম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তাদের তৎকালীন রাজনৈতিক পরিচয়সহ জনযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান কী ছিল তা নির্ধারণ করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এখন দায়িত্ব হচ্ছে একটি গ্রহণযোগ্য নাগরিক কমিশন গঠন করে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করা। তাহলেই বেরিয়ে আসবে যুদ্ধকালীন কার কী ভূমিকা ছিল। এছাড়া চিহ্নিত করতে হবে যারা দালালদের তালিকা প্রকাশে বাধা দেয় বা তালিকা প্রকাশ বন্ধ করতে বলে তারা কারা? তাহলেই বেরিয়ে আসবে তারা কীভাবে আমাদের ৪৮ বছর ধরে ধোকা দিয়ে বোকা বানিয়ে রেখেছে! যদি তাদের প্রকৃত স্বরূপ চিহ্নিত করা না যায়, তাহলে কোনোদিনই জানা যাবে না স্বাধীনতার বিরোধীতা করার পরেও এদেশে কারা কীভাবে পেয়েছে যোদ্ধা আর শহীদের মর্যাদা!
তারা আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ যদি সব স্বাধীনতাবিরোধীদের কর্মকর্তাসহ তালিকা প্রকাশ করে তাহলে অভাগা এই দেশের মানুষ জানতে পারবে জনযুদ্ধকালীন কে কী ভূমিকা পালন করেছে। তারা কীভাবে সময়ের ব্যবধানে মুখোশের আড়ালে ভিন্ন পরিচয়ে সমাজে বিচরণ করছে।
কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন- সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ গোলাম নবী হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এম রাশেদ রাব্বি, শাজাহান কবির সুমন, সদস্য মো. মাসুদ আলম, মো. ছালেক-উর-রহমান (সুমন), মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ গেরিলা, সংস্কৃতিকর্মী আনোয়ার ফরিদী, গণমাধ্যমকর্মী আমীর মোহাম্মদ জুয়েল, নাট্যকার ও নাট্য সংগঠক দীন ইসলাম শ্যামল, মো. শওকত হোসেন বাবুল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৯
এমএএম/আরবি/