ঢাকা, শুক্রবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

শপিংমলকে হাসপাতাল বানানোর অভিযোগ ল্যাবএইডের বিরুদ্ধে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
শপিংমলকে হাসপাতাল বানানোর অভিযোগ ল্যাবএইডের বিরুদ্ধে

ঢাকা: রাজধানীর ধানমন্ডিতে কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিংমলের দোকান কিনে বেআইনিভাবে হাসপাতাল বানানোর অভিযোগ উঠেছে ল্যাবএইডের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই মার্কেট মালিক সমিতির সঙ্গে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্ব চলছে। সর্বশেষ গত ২১ জানুয়ারি এ দ্বন্দ্ব রূপ নেয় সহিংসতায়।

কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিংমল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শপিংমলে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা করছে ল্যাবএইড। বিভিন্ন সময় বাধা দিয়ে এবং আইনি সহায়তা চেয়েও তারা এর প্রতিকার পাননি।

বরং গত ২১ জানুয়ারি হাসপাতালের লোকজন এবং বহিরাগতরা মিলে মার্কেটে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিংমল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সানাউল হক নীরু।

তিনি বলেন, রাজউকের লে-আউট প্ল্যান ও ডেভেলাপারের ঘোষণা অনুযায়ী শপিংমলটির একটি বেজমেন্ট, নীচতলা থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনড মার্কেট এবং ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা অফিসের জন্য বরাদ্দ ছিল। শপিংমল চালুর প্রাথমিক পর্যায়ে ২০৪টি দোকানের মধ্যে নীচতলার ৪১টি, দ্বিতীয় তলায় ২৪টি, ৩য় তলার ১২টি এবং ৪র্থ তলার ৩১টি দোকান এবং ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় অফিস, ডাক্তারের চেম্বার, কোচিং সেন্টার ও অন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।

২০০৫ সালে আমরা জানতে পারি, মার্কেটের ৩য় তলার (৩০১-৩৫১) এবং ৪র্থ তলার (৪০১-৪৫১) মোট ১০২টি দোকান ও ৫ম তলার ৭০০০ বর্গফুট অফিস স্পেস কিনে নিয়েছে ল্যাবএইড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ. এম. শামীম। দোকানগুলো কিনে নেওয়ার পর মার্কেটের ৩য়, ৪র্থ তলা ও ৫ম তলার ল্যাবএইডের পাশের অংশ ভেঙে হাসপাতালের সঙ্গে এক করে দেওয়া হয় এবং ওই ফ্লোরগুলোতে সাধারণ ক্রেতা ও মার্কেটের সংশ্লিষ্ট লোকজনের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

রাজউক চতুর্থ তলা পর্যান্ত মার্কেটের অনুমতি দিলেও ল্যাবএইড জোর করে হাসপাতাল বানিয়ে ফেলছে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, দোকান কিনে জোরপূর্বক হাসপাতাল বানিয়ে ফেলার অভিযোগে ২০১১ সালের ২৮ আগস্ট ধানমন্ডি থানায় সাধারণ ডায়েরি করে ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। এর আগে কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিংমল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ২০০৮ সালের ১৩ জানুয়ারি সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

২০১১ সালের ১১ অক্টোবর রাজউকের অনুমোদিত নকশার বিচ্যুতি ঘটানোর কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা হয়। এরপর ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি চূড়ান্ত নোটিশের মাধ্যমে শপিং মলের ৩য় ও ৪র্থ তলার নকশা বহির্ভূত স্থাপনা ও সংযোগ ব্রীজ নিজ খরচে ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয় ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষকে।

এরইমধ্যে ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর মার্কেটের ভূমি মালিক ও ল্যাবএইডের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিংমল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। শুনানি শেষে ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন আদালত, যা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।

সানাউল হক নীরু আরও বলেন, অথচ ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে তাদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন। বাধা দিতে গেলে বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকিসহ সর্বশেষ শপিংমলে হামলা-ভাংচুর চালানো হয়। আমরা আইনগতভাবে এ অচলাবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই।

ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষের কাছে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সার্ভিস চার্জ বাবদ ৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
পিএম/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।