বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
দেশের সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে সোমবার (২ মার্চ) সকালে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এই মাসে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ২১২ জন পথচারী, ১৩৪ জন চালক, ৭৩ জন পরিবহন শ্রমিক, ২৬০ জন শিক্ষার্থী, ১৩ জন শিক্ষক, দুইজন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৮৮ জন নারী, ৭৬ জন শিশু, একজন সাংবাদিক, একজন প্রকৌশলী, দুইজন মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৬ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে নিহত হয়েছে ৯৯ জন চালক, ১৮৭ জন পথচারী, ৬২ জন নারী, ৭১ জন ছাত্রছাত্রী, ৪৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৪ জন শিশু, ১৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, দুইজন মুক্তিযোদ্ধা, ১১ জন শিক্ষক, একজন প্রকৌশলী ছিল।
মোট সংগঠিত দুর্ঘটনায় ১৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ বাস, ২৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ প্রাইভেটকার-জীপ-মাইক্রোবাস, ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২০ দশমিক ৯৫ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১০ দশমিক ৫৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক, ১২ দশমিক ৩৩ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
মোট দুর্ঘটনার ৫৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৮ দশমিক ০৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ খাদে পড়ে, ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ বিবিধ কারণে, শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানুয়ারি মাসের তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ আহতের হার বাড়লেও সড়কে দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ ও নিহত ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমেছে।
পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনা ১ দশমিক ৪ শতাংশ, পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা ১ দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং বেপরোয়া গতির কারণে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা শূন্য দশমিক দুই শতাংশ কম সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই মাসে মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৪৫ দশমিক ০৪ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৬ দশমিক ১৯ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৩ দশমিক ২ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ১৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়।
২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের তুলনায় বিগত ফেব্রুয়ারি মাসে সড়ক-মহাসড়কের উন্নয়নের ফলে যানবাহনের গতি বাড়ার কারণে আঞ্চলিক মহাসড়কে ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ ও ফিডার রোডে ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা বাড়লেও জাতীয় মহাসড়কে ২ দশমিক ৮১ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে।
এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১৬ ফেব্রুয়ারি এইদিনে ২৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ৪০ জন আহত হয়। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ২৭ ফেব্রুয়ারি এইদিনে ছয়টি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো- বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালনা, বিপদজনক ওভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের ক্রটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদকসেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ছোট যানবাহন বৃদ্ধি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩২ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২০
এএটি