ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

এই ঘা শুকানোর না...

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২০
এই ঘা শুকানোর না...

ঢাকা: ‘পুরো পরিবারটাই শেষ হয়ে গেল! এই ঘা শুকানোর মতো না...। আজীবন এই ঘা আমাদের বয়ে চলতে হবে,’ কথাগুলো বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন রাজধানীর দিলু রোডে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত শহীদুল কিরমানির মামাতো বোন শেখ রেশমী। 

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ভাইয়া (শহীদুল কিরমানি) জানতেন তার শিশু সন্তান রুশদি মারা গেছে। তার স্ত্রীও নেই।

তিনিও মারা যাবেন! ভাবি (জান্নাতুল ফেরদৌসী) যখন মারা যান তখন ভাইয়া লাইফ সাপোর্টে। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর না জানলেও ঘটনার পরপরই হাসপাতালে শুয়ে আঁচ করতে পেরেছিলেন যে, রুশদি আর নেই।

ইস্কাটনের দিলু রোডের বাসায় বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে অগ্নি দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যায় চার বছরের শিশু রুশদি। শিশু রুশদী ও তার মা জান্নাতুল ফেরদৌসীর পর মারা গেলেন বাবা শহীদুল কিরমানিও।  

সোমবার (০২ মার্চ) সকাল সাড়ে ছয়টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শহীদুলের মৃত্যু হয়। এর আগে রোববার (০১ মার্চ) সকালে মারা যান রুশদীর মা জান্নাতুল ফেরদৌসী ।  

আগুনে শ্বাসনালিসহ জান্নাতের শরীরের ৯৫ ও শহিদুলের শরীরের ৪৩ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

হাসপাতাল চত্বরে রেশমীর সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন ঢামেক মর্গে শহীদুলের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও এসেছেন হাসপাতালে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন শেখ রেশমী।  

‘ঘটনার সময় ভাইয়ার কোলে ছিল রুশদি। ছাদে যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রচণ্ড ধোঁয়ার কারণে যেতে পারেননি তারা। সিঁড়ি দিয়ে নামতে গেলে হঠাৎ বিকট আওয়াজে কোল থেকে ছিটকে পড়ে যায় রুশদি। দগ্ধ অবস্থায় প্রথমে হাসপাতালে কথা বলতে পেরেছিলেন ভাইয়া। ’

তিনি বলেন, হাসপাতালে নিজেই বলছিলেন- রুশদি তো নেই আমি জানি। তোমার ভাবিও মারা যাবে, আমিও হয়তো বাঁচবো না। ভাইয়া বুঝতে পেরেছিলেন যে, একে একে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে।  

পড়ুন>>রুশদির কাছে যেতে চেয়েছিলেন মা, দাফন তার পাশেই

‘এই কষ্ট সহ্য করার মতো না। পুরো পরিবার শেষ গেলো এই ঘা কখনই শুকাবে না। ’

শেখ রেশমী জানান, স্ত্রী জান্নাত ও ছেলে রুশদির কবরের পাশেই গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ইটনা গ্রামে শহীদুল কারমানির মরদেহ দাফন করা হবে।  

উল্লেখ্য, দিলু রোডের ওই আবাসিক এলাকার বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে এ নিয়ে একই পরিবারের তিনজনসহ মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২০
এজেডএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।