প্রতারণার শিকার বরিশাল নগরের এক ঠিকাদারের দেওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাতভর অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের এখন পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করেছে গোয়েন্দা শাখা।
বুধবার (১১ মার্চ) দুপুরে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দফতরে অস্থায়ী কার্যালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান নগর বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হয়দার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুই মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে ‘টার্গেট ধনাঢ্যদের’ কাছ থেকে চাহিদামাফিক অর্থ হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্রটি। এরমধ্যে প্রথমত প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভাড়া ফ্লাটে নিয়ে চক্রের অর্ন্তভূক্ত তরুণীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় আটক। দ্বিতীয়ত ডিবি পরিচয়ে শারীরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে অর্থ আদায়।
পুলিশ জানিয়েছে, শুধু ১০ জনই নয়, এ চক্রে আরও অনেকের জড়িত থাকার তথ্য তারা পেয়েছেন। এরমধ্যে একাধিক নারী সদস্যও রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ম্যানেজমেন্ট চতুর্থ বর্ষের ছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ একমাস মুঠোফোনে যোগাযোগের সূত্রে প্রেমের সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়েন বগুড়া রোড মুন্সি গ্যারেজের বাসিন্দা ঠিকাদার সোহেল আল মাসুদ।
প্রেমের সর্ম্পকের সূত্র ধরে মঙ্গলবার (১০ মার্চ) দু’জনে সরকারি বরিশাল কলেজের সামনে দেখা করেন এবং শ্রীনাথ চ্যাটার্জি লেনে কলেজ পড়ুয়া ওই তরুনীর আত্মীয়ের বাসায় অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর জন্য সম্মত হন।
পুলিশ জানিয়েছে, বিসিসির ১৮ নং ওয়ার্ডের চ্যাটার্জী লেনের লাবু মিয়ার ভাড়া বাসায় ঠিকাদারকে নিয়ে যান তরুনী। সেখানে নিয়ে ঠিকাদারকে আটকে বিবস্ত্র করা হয়। পরে প্রতারক চক্রের সদস্য জাকির ও মামুন ডিবি সদস্যের পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় যান এবং নানানভাবে হয়রানি শুরু করেন। একপর্যায়ে টাকা দিলে ছেড়ে দেওয়া হবে জানালে ওই ঠিকাদার আত্মরক্ষায় সঙ্গে থাকা নয় হাজার এবং বিকাশের মাধ্যমে আরও ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে জিম্মিদশা থেকে মুক্তিপান।
পরে ওই ঠিকাদার মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে অভিযানে নামে ডিবি পুলিশ।
আভিযানিক দল থাকা পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) ছগির হোসেন ও উপ পরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিন মাহি জানান, এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। পাশাপাশি চক্রটি বরিশাল নগরে এর আগেও এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ পুরো চক্রটিকে আটকের চেষ্টা করছে।
আটকরা হলেন, নগরের শ্রীনাথ চ্যাটার্জি লেনের ভাড়াটিয়া ও শরিয়তপুর জেলার গোসাইরহাট এলাকার জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা মনি, মহাশ্মশান এলাকার ভাড়াটিয়া ও এয়ারপোর্ট থানার ভবানীপুর এলাকার মকবুল হোসেন ও তার স্ত্রী লিজা বেগম এবং তাদের সহযোগী মামুন বয়াতি, সেলিম হাওলাদার, আরিফুর রহমান তালুকদার, ফারজানা আক্তার ঝুমুর, খুশি বেগম ও আশা আক্তার।
আটক সেলিম হাওলাদারের বিরুদ্ধে এর আগে দায়ের করা মাদকসহ তিনটি মামলা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২০
এমএস/এবি