ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

জয়পুরহাটে জমে উঠেছে ৪শ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২০
জয়পুরহাটে জমে উঠেছে ৪শ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা ঘোড়ার মেলা। ছবি: বাংলানিউজ

জয়পুরহাট: জমে উঠেছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার ৪শ বছরের ঐতিহ্যবাহী গোপিনাথপুর মেলার ঘোড়ার হাট। পছন্দের প্রাণীটিকে পেতে ক্রেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে রীতিমতো কাড়াকাড়ি প্রতিযোগিতা।

মেলায় মিঠাই-মিষ্টান্ন, শিশুদের খেলনা সামগ্রীসহ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নাগরদোলা নজর কেড়েছে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দর্শনার্থীদের। মেলায় নিরাপত্তা জোরদারে কাজ করছেন পুলিশের সিভিল ও পোশাকধারী সদস্যরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় এখন মুখর ঐতিহ্যবাহী গোপিনাথপুর মেলার ঘোড়ার হাট। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন তারা। এবার এ মেলায় বিজলী, রানি, সুইটি, বাহাদুর, পাওয়ার হর্স, চালাও গুলিসহ হরেক রকম নামের ঘোড়া এসেছে। ঘোড়ার মেলা।  ছবি: বাংলানিউজদরদাম ঠিকঠাকের পর একটি খোলা মাঠে ঘোড়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ক্রেতাকে দেখানো হয় ঘোড়ার দৌড়। ওদের ক্ষিপ্রতা আর বুদ্ধিমত্তায়ও মেলে নামের স্বার্থকতা। ঘোড়াগুলোর দুলকি চলনে বিদ্যুৎ গতি, চোখের পলকে যেন মাইল পার। এমন নানামুখি গুণের কারণে দেশি-বিদেশি ঘোড়াগুলোর কদরও বেশি। তাইতো সারাদিন ঘুরে দরদাম ঠিক করেই পছন্দের ঘোড়াটিকে বেচাকেনা করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা থেকে আসা রবিউল ইসলাম, বগুড়ার দুপচাচিয়া থেকে আসা আশরাফ আলী, দিনাজপুরের বিরাম থেকে আসা আবু বক্কর জানান, দুপুরের পর থেকেই হাজারো ঘোড়ার মধ্যে পছন্দের ঘোড়াটি দেখছেন। দামে দরে মিললে ঘোড়া কিনবো।

নওগাঁর ধামইরহাট হাট থেকে আকবর আলী এসেছেন ঘোড়া বিক্রি করতে। তিনি বলেন, তার ঘোড়াটির দাম করেছেন এক লাখ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু দেড় লাখের কমে তিনি বিক্রি করবেন না। গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কুদ্দুস ব্যাপারী তার সবচেয়ে পছন্দের ঘোড়ার দাম চেয়েছেন ৭ লাখ টাকা। কিন্তু কেউ এখনো দাম দর করেনি।  

ব্যতিক্রমী এই মেলায় একসঙ্গে শতশত ঘোড়া দেখতে পেরে খুশি দর্শনার্থীরা। তবে তারা ঘোড়ার খেলা দেখার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে নির্দিষ্ট একটি নিরাপদ মাঠ তৈরির আহ্বান জানান। ঘোড়ার মেলা।  ছবি: বাংলানিউজঐতিহ্যবাহী গোপিনাথপুর মেলা কমিটির প্রধান ও গোপিনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সাঈদ জোয়ারদার বলেন, দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে এই মেলা ১৩ দিনের মধ্যে ৭দিনই থাকে ঘোড়া ও গবাদিপশুর হাট। বাকি দিনগুলো থাকে জামাই-মেয়েদের পদচারণায়। সেই কয়েক দিন মেলায় বসে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সার্কাস, যাত্রাপালা ও পুতুল নাচ। এছাড়াও মেলায় থাকে শিশুদের মন জয় করা নাগরদোলা, চড়কিসহ বিভিন্ন ধরনের খেলনা, গৃহস্তকাজে ব্যবহার্য সব ধরনের তৈজসপত্র ও মিঠাই-মিষ্টান্ন।

এ ব্যাপারে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু ওবায়েদ জানান, মেলায় নিরাপত্তা জোরদারে কাজ করছেন পুলিশের সিভিল ও পোশাকধারী সদস্যরা।

৯ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এ ঘোড়ার মেলা চলবে ১৫ মার্চ পর্যন্ত। আর এই ৭ দিনে অন্তত কযেক কোটি টাকার ঘোড়াসহ গবাদিপশু কেনাবেচা হবে।    

বাংলাদেশ  সময়: ১০২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২০
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।