ঢাকা, রবিবার, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হলো দক্ষিণাঞ্চলবাসীর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১২ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২০
আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হলো দক্ষিণাঞ্চলবাসীর আট লেনের এক্সপ্রেসওয়ে ও ইনসাটে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: ‘পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরুর পর পরই সড়কজুড়ে সড়কপথের নির্মাণযজ্ঞ দেখে প্রথমমত বিরক্তই লাগতো। কারণ ঢাকা যেতে ভাঙ্গা থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত সড়কপথের বাতাসে ছিল ধুলা-বালির আস্তরণ। ভীষণ কষ্ট লাগতো। দিন যায় আর সড়কের আধুনিকতা ফুটে উঠে। মন মেনে নেয় ভালো কিছুর জন্য কষ্টটা সাময়িক। এই সড়ক চালু হলে সড়কপথের যেন পরিবর্তন তা কল্পনাও করা যাবে না। বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) উদ্বোধন হলো এই এক্সপ্রেসওয়ে। আমরা গর্বিত এই সড়ক পেয়ে।’

বৃহস্পতিবার এ অভিমত ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে কথাগুলো বলেছিলেন শিবচরের বেসরকারি হাই স্কুলের এক শিক্ষক।

বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন অনুষ্ঠান প্রদর্শিত হয়। এ সময় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও সুধী সমাজের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন মাদারীপুরের সাধারণ মানুষ।

আলাপকালে স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার থেকে আমাদের সড়কটি আমরা ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছি। আসলে সড়কটি দেখলেই প্রাণ জুড়িয়ে যায়। দক্ষিণাঞ্চলের এত বড় সড়ক পেয়ে আমরা গর্বিত। সড়ক পথে যোগাযোগের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন হলো আজ থেকে।

জানা গেছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত সড়ক পথের দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে শিবচরের পাঁচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত পথের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। এই অংশটুকুতে পাঁচটি ব্রিজ, ১৩টি কার্লভার্ট ও তিনটি আন্ডারপাস রয়েছে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে শিবচরের পাঁচ্চর পর্যন্ত আসতে এখন সময় লাগবে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট। এদিকে পাঁচ্চর থেকে পদ্মাসেতুর জাজিরা পয়েন্ট পর্যন্ত রয়েছে এ্যাপ্রোচ সড়ক। যার সুবিধা আরও আগে থেকেই পাচ্ছেন যাত্রীরা। আর বৃহস্পতিবার থেকে যুক্ত হলো এক্সপ্রেসওয়ে। ভাঙ্গা থেকে সরাসরি শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ঘাট পর্যন্ত সড়ক পথে আর কোনো ভোগান্তি রইলো না যাত্রীদের।

এদিকে মাওয়া থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত সড়ক পথেও স্বল্প সময়ের মধ্যে যাত্রীরা ঢাকা যেতে পারবে। আর ভাঙ্গা থেকে ঢাকা পর্যন্ত পুরো পথের সুবিধা পেতে এখন পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ শেষ হতে হবে। এর কাজ চলমান রয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পে প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬ হাজার ২৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। পরবর্তিত সময়ে সংশোধিত ডিপিপিতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৮৯২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর বাইরে মূল প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়নি এমন কিছু কাজের জন্য পরবর্তীত সময়ে ২০১৮ সালের জুনে চার হাজার ১১১ কোটি টাকার আরেকটি পৃথক ডিপিপি অনুমোদন করে সরকার।

এই ডিপিপি অনুযায়ী কাজের মেয়াদ ধরা হয়েছে জুন ২০২০ সাল পর্যন্ত। দুইটি ডিপিপি মিলিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে মোট ব্যয় হচ্ছে ১১ হাজার ৩ কোটি টাকা। আট লেনের এই এক্সপ্রেসওয়েটি সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন-এসডব্লিউও (পশ্চিম)।

বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২০
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।