শুক্রবার (১৩ মার্চ) সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর এলাকার বস্তিতে এখনো ক্ষতিগ্রস্তরা পুড়ে যাওয়া টিন, আসবাবপত্র, লোহাসহ বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম সরাতে ব্যস্ত। এরই মাঝে কিছু মানুষ লোহার পেরেক খুঁজছিলেন!
আকাশে চকচকে রোদ আর চারপাশে ময়লা আবর্জনার গন্ধ।
পুড়ে যাওয়া বস্তিতে জীবিকার সন্ধান। ছবি: জিএম মুজিবুর
এই টাকা দিয়ে কী করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এক ছেলে, পাঁচ মেয়ে আর স্বামীরে নিয়ে খামু। ৩ বছর আগে সিলেট থেকে ঢাকায় আইসি। কালশী বাউনিয়াবাধ বস্তিতে থাকতাম। ওইখানেও আগুনে আমার ঘর পুড়ে গেছে। ’
একই জায়গা থেকে রূপনগর বস্তির ধ্বংসস্তূপে ভাঙ্গারি খুঁজতে এসেছেন সামিরুন বেগম (২৫)। রিকশাচালক স্বামী আর এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে তাদের পরিবার।
সামিরুন বলেন, আমি আমার খালার লগে ভাঙ্গারি টোকাতে আইসি। লোহার পেরেক বিক্রি করে যা টাকা পামু এই টাকা দিয়া জামাই আর পোলা-মাইয়ারে নিয়া খামু। গতকালকেও আইছিলাম খালার লগে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এইহানে ভাঙ্গারি টোকাইছি।
তাদেরই পাশেই ধ্বংসস্তূপ থেকে ভাঙ্গারি খুঁজছিল ৯ বছরের মো. শরীফ। রূপনগরের ‘ট’ ব্লকে পরিবারের সঙ্গে থাকে সে। বাবা রিক্সা চালক। মা বাসায় কাজ করেন। বাবা মাকে জানিয়ে সে ভাঙ্গারি খুঁজতে এসেছে। তার সঙ্গে কথা হলে সে বলে, বৃহস্পতিবার ভাঙ্গারি টোকায়া ২০ টাকা পাইছিলাম। এই টাকা দিয়ে চিপস আর বিস্কুট কিনে খাইছি। আইজকাও আইসি এখানে ভাঙ্গারি টোকাইতে।
লোহার টুকরো ও পেরেক খুঁজতে ব্যস্ত তারা। ছবি: বাংলানিউজ
এর আগে বুধবার (১১ মার্চ) সকালে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর এলাকার ‘বারেকের বস্তিতে’ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে প্রায় পাঁচ শতাধিক ঘর। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। ততক্ষণে আগুনের পুড়ে গেছে পুরো বস্তি।
আরও পড়ুন>> পলিথিনের নিচেই বাস রূপনগরের আগুনে সর্বহারাদের
আরও পড়ুন>> রূপনগরে বস্তিতে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ২৫ ইউনিট
আরও পড়ুন>> রূপনগর বস্তিতে পুড়েছে প্রায় ২০০ ঘর, আগুন নিয়ন্ত্রণে
আরও পড়ুন>> পানি সংকটের কারণেই কমছিল না আগুনের তীব্রতা
আরও পড়ুন>> বস্তির নেতাদের লিস্ট হবে: ইলিয়াস মোল্লা
আরও পড়ুন>> পেটের জ্বালা মেটাতে ধ্বংসস্তূপে জ্বলছে চুলা
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২০
এমএমআই/এইচএডি/