ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি: ডা. মালেক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২০
বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি: ডা. মালেক

ঢাকা: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে আমরা যে কারণে বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছি তার সবগুলো কারণ এখন বিদ্যমান। এই উপমহাদেশে যখন বঙ্গবন্ধু নেই তখন সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। উপমহাদেশের রাজনৈতিক দর্শনে এই সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। 

মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) সকালে রাজধানীর কলাবাগানের বশিরউদ্দিন রোডে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের কার্যালয়ে জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার এস এ মালেক একথা বলেন।  

ডাক্তার এস এ মালেক বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন মানে বাঙালি জাতির জন্মদিন, বাংলাদেশের জন্মদিন।

বাঙালি জাতির পিতার রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে অন্তত এক হাজার আর্টিকেল লেখা যাবে। আজ অনেকেই বলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন কী একথা কেউ বলে না। দুর্ভিক্ষে মানুষ যখন না খেয়ে মারা যাচ্ছিল, তখন বঙ্গবন্ধু কাউকে কিছু না জিজ্ঞেস করেই নিজেদের গোলার ধান মানুষকে বিলিয়ে দিয়েছেন। মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসায় ছিল বঙ্গবন্ধুর দর্শন।  

তিনি বলেন, এক বিদেশি সাংবাদিক যখন বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিল আপনার যোগ্যতা কী, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমি আমার বাঙালিকে ভালোবাসি, সাংবাদিক আবার তাকে জিজ্ঞেস করলেন আপনার দুর্বলতা কী, তখন বঙ্গবন্ধু বললেন, আমি আমার বাঙালিকে অনেক ভালোবাসি। আমরা বাঙালিরা বঙ্গবন্ধুর এই ভালবাসার কী প্রতিদান দিয়েছি। আমরা বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতেও ব্যর্থ হয়েছি।  

১৯৭৫ সালের ৬ আগস্ট এর ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি ৬ আগস্ট সকালে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গিয়ে দেখলাম বঙ্গবন্ধু মাওলানা তর্কবাগীশের সঙ্গে বসে নাস্তা করছেন। পাশে বসে রয়েছেন খন্দকার মোশতাক। আমি ঢুকেই অবাক হয়ে গেছি। এর আগের দিন আগামাসি লেনে মোস্তাক সারারাত মিটিং করেছে। আমি সেই বাসার পাশেই আরেকটি দোতালা বাসায় ছিলাম‌। সেখান থেকে দেখেছি প্রথমেই সে বাসায় ঢুকেছে ওবায়দুর রহমান, তারপর ঢুকেছে নুরুল ইসলাম মঞ্জু, তারপর ঢুকেছে মাহবুবুল আলম চাষী, তারপর তাহের ঠাকুর, আরো কয়েকজন ছিল তাদের মুখ ঢাকা থাকার কারণে দেখতে পাইনি।
সারা তারা মিটিং করেছে।

‘বঙ্গবন্ধু নাস্তা সেরে সোফার উপরে মোশতাকের পাশে বসলেন। এরমধ্যে পাবনা থেকে একজন লোক মিষ্টি নিয়ে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর জন্য। বঙ্গবন্ধু একটা মিষ্টি উঠিয়ে মোশতাকের মুখে দিয়ে বললেন, তুমি খন্দকার মানুষ তুমি আগে খাও। এরপর মোস্তাক চলে গেল, আমি বঙ্গবন্ধুকে একটু পাশে ডেকে এই ঘটনা বললাম। বঙ্গবন্ধু আমাকে বললেন, পাগল তোরা এসব অমূলক চিন্তা করিস, আমাকে ওরা মারবে কেন? কেউ আমাকে মারবে না। ’ 

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এস এ মালেক বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সহচর জড়িত ছিল। এমনও তো হতে পারে যারা শেখ হাসিনার পাশে ২/৩ মিটার দূরত্বে বসে শেখ হাসিনার শতমুখী প্রশংসা করছেন তারাই আগামী দিনে শেখ হাসিনা হত্যাকাণ্ডে জড়িত হতে পারেন। এখানেই আমার আতঙ্ক।  

এস এ মালেকের সভাপতিত্বে এবং মতিউর রহমানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আশরাফ উদ্দিন, অধ্যাপক ফিরোজ, ডা. প্রিয়ব্রত পাল, এম এ জলিল প্রমুখ।  

আলোচনা সভা শেষে মিরপুরে ১২০ জন এতিমকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২০
আরকেআর/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।