ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রেজার মৃত্যু: তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২১
রেজার মৃত্যু: তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি রেজাউল করিম রেজা

বরিশাল: বরিশালে পুলিশি নির্যাতনে রেজাউল করিম রেজার (৩০) মৃত্যুর অভিযোগ ওঠার পর তার ব্যাখ্যা দিয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। তাদের দাবি, নির্যাতনে নয়, রেজার বাম পায়ের সংযোগস্থলে ক্ষত ছিল।

সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে পাঠানো ই-মেইল বার্তায় বিষয়টির ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

যে বার্তার শুরুতেই বলা হয়েছে, হাজতি নম্বর- ৬৬৩১/২০, মো. রেজাউল করিম ওরফে রেজার মৃত্যু সম্পর্কে কোনো কোনো ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারিত অস্বচ্ছ সংবাদ প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এ প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

ওই হাজতি আসামি রেজা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার ধানিসাপা এলাকার মো. ইউনুস মিয়ার ছেলে। তার বর্তমান ঠিকানা বরিশাল নগরের কোতোয়ালি মডেল থানার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের আ. হামিদ খান সড়কে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেবাচিম হাসপাতালে মৃত্যু হয় রেজার। এর আগের ঘটনা সম্পর্কে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৯ ডিসেম্বর বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ রেজাকে মাদকসহ গ্রেফতার করে। যে ঘটনায় ওইদিন রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা পরের দিন গত ৩০ ডিসেম্বর আসামিকে বিধি মোতাবেক আদালতে পাঠান। আদালতের আদেশে ওইদিনই রেজাকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।  সে সময় কারা কর্তৃপক্ষ তাকে বুজে নেন।  

কারগারে পাঠানোর পর গত ১ জানুয়ারি রাত ৯ টার দিকে রেজা কারা অভ্যন্তরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রাত সোয়া ৯টার দিকে তাকে শেবাচিম হাসপাতালের উদ্দেশে পাঠানো হয়। রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে শেবাচিম হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়।  

শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের প্রিজন সেলের দায়িত্বে থাকা কারারক্ষীদের মাধ্যমে তাকে প্রিজন সেলে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার ভোরে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যু সংক্রান্তে রোববার কোতয়ালি মডেল থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। যার নম্বর-২/২১।

ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে জানা যায়, তিনি আগে থেকেই এলাকায় মাদক বিক্রেতা ও মাদকসেবী হিসেবে চিহ্নিত ছিলেন। এর আগে তার বিরুদ্ধে মাদক সংক্রান্তে একাধিক মামলা রুজু হয়েছিল। তার শরীরের বামপাশের কুচকিতে ক্ষত ছিল। গত ১ জানুয়ারি ওই ক্ষত স্থান থেকে রক্তক্ষরণ হলে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে চিকিৎসার জন্য শেবাচিম হাসপাতালে পাঠায়।

রেজাকে মাদকদ্রব্যসহ গ্রেফতারের পর পুলিশ যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আদালতে পাঠায়। আদালতের আদেশে তাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হলে কারা কর্তৃপক্ষ আসামিকে বুঝে নেয়। পুলিশের পক্ষ থেকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে কোনো কিছুই করা হয়নি।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে পুলিশি নির্যাতনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তার শরীরের ক্ষত স্থান থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।

তথাপি কোনো কোনো ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারিত অস্বচ্ছ সংবাদ ভিত্তিতে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান উপ-পুলিশ কমিশনারকে (দক্ষিণ) প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২১
এমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।