ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বঙ্গবন্ধুর কারামুক্তি দিবসে স্মারক ডাকটিকিট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২১
বঙ্গবন্ধুর কারামুক্তি দিবসে স্মারক ডাকটিকিট

ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে ডাক অধিদপ্তর স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার শুক্রবার (০৮ জানুয়ারি) বেইলি রোডের সরকারি বাসভবনে দশ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট ও দশ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন এবং পাঁচ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটা কার্ড উদ্বোধন করেন।

পাকিস্তানের মিলানওয়ালি কারাগারে দীর্ঘ ৯ মাস কারাভোগের পর ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তি লাভ করেন।

স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম এবং ডাটা কার্ড শুক্রবার থেকে ঢাকা জিপিওর ফিলাটেলিক ব্যুরো থেকে এবং পরে দেশের অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান পোস্ট অফিসগুলো থেকে সংগ্রহ করা যাবে।

দিবসটির ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে বিবৃতি দিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য একটি অধ্যায়। ২৪ বছরের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের মহাকাব্যের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বেশির ভাগ সময় কারাগারে কাটাতে হয়েছে। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠায় আপসহীন নেতৃত্ব বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। আমাদের একজন বঙ্গবন্ধু ছিলেন বলেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে।

বিবৃতিতে মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কারামুক্তির বিভিন্ন ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭২ সালের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের বন্দিশিবির থেকে টানা ৯ মাস কারাভোগের পর মুক্তি লাভ করেন। এরপর থেকেই দিনটি ‘বঙ্গবন্ধুর কারামুক্তি দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকহানাদার বাহিনীর গণহত্যা চলাকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে নিজ বাসভবন থেকে গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরে তাকে পাকিস্তানের মিলানওয়ালি কারাগারে নির্জন কক্ষে বন্দি অবস্থায় রাখা হয়।

ডাকমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় অর্জিত হলেও তখনও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানিদের হাতে বন্দি। সাড়ে সাত কোটি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া স্বাধীনতার আনন্দের পূর্ণতা ছিল না। পরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ব্যাপক কূটনৈতিক চাপ এবং বিশ্ব শীর্ষ নেতাদের তীব্র সমালোচনার মুখে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দিয়ে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি খুব ভোর বেলা লাহোর বিমানবন্দর থেকে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ বিমানে উঠিয়ে বিদায়ী সংবর্ধনা দেন। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির খবর প্রথম প্রচার করে রেডিও পাকিস্তান। এতে বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দিয়ে লাহোর বিমানবন্দর থেকে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তার গন্তব্যস্থল সম্পর্কে রেডিও পাকিস্তান কোনো খবর না দিয়ে অজ্ঞাত রাখে। পাকিস্তানি বন্দিশিবির থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বহুল প্রত্যাশিত মুক্তির খবর বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিবিসি নিয়মিত অনুষ্ঠান স্থগিত করে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে শেখ মুজিবুর রহমানের অবতরণের খবর লাইভ প্রচার ও বিশেষ বুলেটিন প্রচার শুরু করে। বঙ্গবন্ধুকে হিথ্রো বিমানবন্দরে সংবর্ধনা জানানোর জন্য ছুটে এলেন ব্রিটেনের তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও লেবার পার্টির প্রধান হ্যারল্ড উইলসন (পরবর্তীতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী) এবং বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তারা। বঙ্গবন্ধুর অবতরণের খবর প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে লন্ডনের রাজপথে নেমে আসে হাজার হাজার মানুষের ঢল।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২১
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।