ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সুদের টাকা পরিশোধ না করায় গৃহবধূকে বেঁধে নির্যাতন 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২১
সুদের টাকা পরিশোধ না করায় গৃহবধূকে বেঁধে নির্যাতন  সুদের টাকা পরিশোধ না করায় গৃহবধুকে বেঁধে নির্যাতন 

কক্সবাজার: কক্সবাজারের চকরিয়ার বরইতলী এলাকায় সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এক গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে ওই নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর ও নির্যাতন করতে দেখা যায়। স্থানীয় সুদখোর শওকত ওসমান নামে এক ব্যক্তি এ নির্যাতন চালান।

বুধবার (১৭ মার্চ) এ ঘটনায় বিকেলে পুলিশ শওকত ওসমানের বাবা জহির আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। সেসঙ্গে ভিকটিম নুর আইশাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) চকরিয়ার উপজেলা বরইতলী ইউনিয়নের মোরাপাড়ার হাপানিয়াকাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বুধবার এ নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে নজরে আসে প্রশাসনের। এরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে শওকত ওসমানের বাবা জহির আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।  

ভুক্তভোগী নুর আয়শা ওই এলাকার আলী আহমদের স্ত্রী। আলী আহমদ একজন দিনমজুর। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।  

বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নিয়াজুল ইসলাম বাদল বাংলানিউজকে বলেন, কয়েক মাস আগে নুর আয়শা তার স্বামীর চিকিৎসার জন্য শওকত ওসমানের কাছ থেকে চার হাজার টাকা নেন। ইতোমধ্যে নুর আয়শা সুদ ও আসলসহ আট হাজার টাকা পরিশোধও করেন। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে শওকত ওসমান আরও দুই হাজার টাকা দাবি করলে নুর আয়শা ওই টাকা বৃহস্পতিবার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু এতে রাজি হননি শওকত ওসমান। এক পর্যায়ে শওকত ওসমান গৃহবধু নুর আয়শাকে একটি গাছের সঙ্গে শাড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর ও অমানবিক নির্যাতন চালান।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, সুদখোর শওকত ওসমান একটি গাছের সঙ্গে শাড়ির আঁচল দিয়ে বেঁধে রাখেন নুর আয়শাকে। এ সময় নুর আয়শা তার বাঁধন খুলে দিতে বলেন। কিন্তু নুর আয়শার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে শওকত ওসমান কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে নুর আয়শাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন এবং চুল ধরে টানতে থাকেন ও চুল গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। পরে স্থানীয় বেশ কয়েকজন মহিলা নুর আয়শাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন শওকত ওসমান।

বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার বলেন, ঘটনাটি জানার পরই আমি ঘটনাস্থলে যাই। এলাকাবাসী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত শওকতকে না পাওয়ায় তার বাবা জহির আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২১
এসবি/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।