ঢাকা: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল নিউইয়র্কের যৌথ উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপিত হয়েছে। দুই পর্বে ভাগ করে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বুধবার (১৭ মার্চ) সকালে স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেট স্ব স্ব কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিবসটির কর্মসূচি শুরু করে। এরপর জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) স্থায়ী মিশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ, মুক্ত আলোচনা এবং জন্মদিনের কেক কাটা হয়। স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এবং কনস্যুলেট জেনারেলের অডিটোরিয়ামে আলাদা আলাদাভাবে আয়োজিত সকালের পর্বে জাতির পিতা ও তার পরিবারের শাহাদাত বরণকারী সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত হয়।
বিকেলে স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেটের যৌথ উদ্যোগে শিশুদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভার্চ্যয়ালি অনুষ্ঠিত হয় শিশু আনন্দমেলা। এতে নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশি শিশুদের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ উপস্থাপন এবং ‘নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশে পত্রলিখন’ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের ভাষণ উপস্থাপনের ভিডিও ও পত্র ভার্চ্যুয়াল এই অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়। শিশুদের অংশগ্রহণে ‘শোনো একটি মুজিবের কণ্ঠে’ সমবেত সঙ্গীত, কবিতা পাঠ ও নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজনে মুগ্ধ হন দর্শকরা।
অনুষ্ঠানটির র্যাফেল ড্র পর্ব অংশগ্রহণকারী শিশুদের বাড়তি আনন্দ এনে দেয়। বিকেলের এই ভার্চ্যুয়াল আয়োজনে জাতির পিতার জন্ম থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তার অবদানের ওপর একটি শিশুতোষ গ্রাফিক্স ভিডিও প্রদর্শিত হয়।
সকালের আলোচনা পর্ব এবং বিকালের ‘শিশু আনন্দমেলা’ উভয় পর্বেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। এছাড়া শিশুদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্ক এর কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেছা।
স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলার স্বাধিকার আদায়ের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে জাতির পিতা সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমাদের উপহার দিয়েছেন স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশ।
স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেট আয়োজিত জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের আয়োজনে নিউইয়র্ক প্রবাসী শিশুরা জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ উপস্থাপন এবং বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশে লেখা চিঠিতে যে গভীরতা, অধ্যয়ন, পরিশীলন ও স্বতঃস্ফূর্ততা দেখিয়েছে তা সত্যিই বিস্ময়কর মর্মে মন্তব্য করেন স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি শিশুদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর লেখা একটি চিঠি পাঠ করে শোনান।
নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেছা বলেন, বঙ্গবন্ধুর মানবদরদী ও নির্ভিক শৈশবের ইতিহাস, তার মেধা ও প্রজ্ঞা এবং তার জীবনের আদর্শ আমাদের শিশু-কিশোরদের অনুপ্রাণিত করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে।
কোভিড-১৯ এর এই সঙ্কটময় প্রেক্ষাপটে স্থানীয় নীতি ও নির্দেশনা, জাতিসংঘ সদরদপ্তরের পরামর্শ ও জাতীয় নির্দেশনা অনুযায়ী জনস্বার্থ রক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সকালের পর্বটি সংক্ষিপ্ত আকারে এবং বিকালের পর্বটি ভার্চ্যুয়ালভাবে আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২১
টিআর/এমজেএফ