মেহেরপুর: অসাবধানতাবশত বিদ্যুতের তারে হাত দিতেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ল লেদ দোকানের কিশোর শ্রমিক ইব্রাহীম হোসেন (১৩)।
ইব্রাহীম গাংনী উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের হাওড়াপাড়া এলাকার আরিফ হোসেনের একমাত্র ছেলে।
রোববার (৩ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে সেলিমের লেদের পাশের অপর একটি লেদের দোকানে অসাবধানতাবশত বিদ্যুস্পৃষ্ট হয় ইব্রাহীম। এরপর ওই দোকানের কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিক নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ছাতিয়ান গ্রামের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে জানান, সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে সামান্য লেখাপড়া শিখে লেদের দোকানে কাজ নেয় কিশোর ইব্রাহীম। সংসারের সেই সচ্ছলতা ফেরাতে পারলো না সে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেলো।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বামন্দী বাসস্ট্যান্ডের সেলিম হোসেনের ওই লেদ কারখানাটিতে শিশুরা কাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশু শ্রমের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। শুধু ওই লেদ কারখানাতেই নয়, মেহেরপুর জেলার অলিগলিতে অপরিকল্পিতভাবে আইনকে অমান্য করে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে লেদ কারখানা। এসব লেদ কারখানাতে শত শত শিশু শ্রমিক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে। জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়না।
এ ব্যাপারে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান বাংলানিউজকে বলেন, লেদ কারখানার মালিকদের ডেকে তাদের কারখানাগুলোতে শিশু শ্রমিক না রাখার ব্যাপারে কঠোরভাবে নিষেধ করা আছে। এছাড়া জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকেও লেদ কারখানাগুলোতে মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে হয়ে থাকে। এই বয়সে লেদ কারখানাগুলোতে শিশুদের কাজ করতে যাওয়ার কথা না। বিভিন্ন কারণে শিশুরা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গেছে হয়তো। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লেদ কারখানার মালিকদের ডেকে আবারও সচেতনতা বাড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২১
এনটি