ঢাকা, সোমবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ফুটপাতের অবৈধ হোটেলের খাবার গরিবদের মধ্যে বিলি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২১
ফুটপাতের অবৈধ হোটেলের খাবার গরিবদের মধ্যে বিলি ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেরীনা নাজনীন

ঢাকা: ফুটপাতের অবৈধ হোটেল জব্দ করে তার খাবার অসহায়দের মাঝে বিতরণ করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। বিনামূল্যে সেই খাবার খেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন গরিব-দুঃখীরা।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের এমন কর্মকাণ্ডকে সাধুবাদ জানিয়েছে উপস্থিত অনেকেই।

রোববার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এমনই ঘটনা ঘটে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ব্যস্ততম এলাকা জরুরি বিভাগের সামনের ফুটপাতে।

সারাবছরই ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনের এ ফুটপাতটি অবৈধ দোকানিদের দখলে থাকে। প্রধান সড়ক বন্ধ করে চলে তাদের বেচাবিক্রি। প্রশাসনও যেন তাদের কাছে অসহায়। প্রায় প্রতিদিনই এদের সঙ্গে প্রশাসনের চলে ইঁদুর-বিড়াল খেলা। এসব অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয় প্রায় প্রতিদিনই। তবে অভিযান শেষ করে সংশ্লিষ্টরা এলাকা ত্যাগ করার পরপরই আবার দখল হয়ে যায় সড়ক ও ফুটপাত।

ঢামেক জরুরি বিভাগের সামনের রাস্তায় রোববার সন্ধ্যায় হঠাৎ দোকানিদের দৌঁড়াদৌড়ি লক্ষ্য করা যায়। পরক্ষণেই জানা যায়, ফুটপাতে অবৈধ দোকান উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়েছে।

দেখা যায়, জরুরি বিভাগের রাস্তার বিপরীত পাশের ফুটপাতে কয়েকটি খাবারের দোকান জব্দ করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা-১ (উপ-সচিব) মেরীনা নাজনীন। দোকান থেকে নিজ হাতেই প্লেটে খাবার সাজিয়ে বিতরণ করছেন গরিবদের মাঝে। আর এটি দেখেই পথচারী, রিকশা চালক ও হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসা স্বজনরা দোকানের চারপাশে ভিড় করছেন।

মেরীনা নাজনীন বলেন, ঢামেকের সামনে ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকানপাট করছে এরা। হোটেলও খুলে ফেলেছে। ধানমন্ডি এলাকায় অভিযান শেষ করে এখান দিয়ে নগর ভবনে যাওয়ার সময় এটি লক্ষ্য করি। আমরা ফুটপাতগুলো জনগণের হাঁটার জন্য উন্মুক্ত রাখতে চাই। এজন্য বারবারই এগুলো উচ্ছেদ করি। তারপরও তারা আবার দখল করে ফেলে। আজকে আমি শুধু এই খাবার হোটেলগুলো জব্দ করেছি। আর হোটেলের খাবারগুলো ফেলে না দিয়ে গরীবদের মাঝে বিতরণ করলাম।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে আসলে ফুটপাত দখলের এমন সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। যাদেরকে খেয়ে-পরে বাঁচতে হবে, তারা আইন মানতে চায় না। এ কারণে তারা উচ্ছেদের পর আবার এখানে এসে দোকান নিয়ে বসে পড়ে। আমরা এসব দোকানদারদের পুনর্বাসনে অনেক কর্মসূচি নিয়েছি, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন হকার্স মার্কেটে তাদেরকে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারপরও তারা আবার এসে রাস্তায় দোকান নিয়ে বসে যায়।

শনিরআখড়া থেকে আসা রিকশাচালক শফিক বলেন, হাসপাতালের সামনে রিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম প্যাসেঞ্জারের অপেক্ষায়, পরে দেখতে পেলাম এখানে বিনামূল্যে খাবার বিতরণ দিচ্ছে, তাই খেয়েছি।

পুরান ঢাকা এলাকায় দিনমজুর মোস্তাফিক বলেন, হাসপাতালের সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ দেখলাম খাবার দিচ্ছে। পরে এখান থেকেই ভাত আর মাছ নিয়ে খাচ্ছি। আমার মত আরও অনেক রিকশা চালকই খাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২১
এজেডএস/এমএমজেড

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।