ঢাকা: টিউমার জনিত সমস্যার কারণে অস্ত্রোপচার কক্ষে (ওটি) নেওয়া হয়েছে শিশু ইতিকাকে (৮)। এদিকে একমাত্র সন্তানের চিন্তায় হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলেন ওটির বাইরে অপেক্ষারত তার বাবা।
রেববার (১০ অক্টোবর) এমনই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে।
পেটে টিউমার জনিত সমস্যার কারণে সেলিম খান শ্যামল একমাত্র কন্যা ইতিকাকে গত মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ঢামেক হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি করেন। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা রোববার তার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন।
সে অনুযায়ী ইতিকাকে এদিন সকালে ওটিতে নেওয়া হয়। দুপুরের দিকে ওটির সামনে অপেক্ষারত বাবা সেলিম খান অতিরিক্ত উদ্বেগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের সদস্যরা জানান, একমাত্র সন্তানকে অস্ত্রোপচারের জন্য ওটিতে নেওয়ার সময় বাবা সেলিমের বুক ব্যথা করতে থাকে। কিছুক্ষণ পরে ওটির সামনেই হার্ট অ্যাটাকে মারা যান তিনি।
স্ত্রীর মিতু ও শিশু ইতিকাকে নিয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার ডমলা গ্রামে থাকতেন সেলিম। ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি দোকানে সেলসম্যানের চাকরি করতেন।
বড় ভাবি মুক্তা আক্তার জানান, মেয়ে ইতিকাকে ওটিতে নেওয়ার সময় সেলিম বলতে থাকে ‘আমার বুকে ব্যাথা করছে’। চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে আগে থেকেই এক ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে রাখা হয়েছিল। পরে ওটি থেকে জানানো হয় আরও এক ব্যাগ রক্ত যোগাড় করে রাখতে, পরে লাগতে পারে। এ কথা শুনেই ওটির বাইরে অবস্থানরত সেলিমের হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে দ্রুত তাকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দুপুর পৌনে ২টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে একমাত্র সন্তানের চিন্তায় চিন্তায় আমার দেবর সেলিম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
সন্ধ্যায় ইতিকার বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তা আক্তার জানান, তার অস্ত্রোপচার শেষ হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন সে ভালো আছে, আস্তে আস্তে জ্ঞান ফিরতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ সময়:২০০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০,২০২১
এজেডএস/এমএমজেড