ঢাকা, সোমবার, ২৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ১০ মার্চ ২০২৫, ০৯ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীতে চোখের জলে প্রতিমা বিসর্জন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২১
রাজশাহীতে চোখের জলে প্রতিমা বিসর্জন

রাজশাহী: কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়েই রাজশাহীর পদ্মা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন শেষ হয়েছে। বিজয়া দশমীর মধ্যে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসবের পাঁচ দিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলো আজ।

শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মহানগর ঘেঁষা পদ্মা নদীতে চলে প্রতিমা বিসর্জন।  

পদ্মা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে যাতে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেজন্য রাজশাহীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বাত্মক সতর্ক অবস্থানে ছিল। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন ছিল। মহানগরের পদ্মা নদীর তীরে নেওয়া হয়েছিল বাড়তি নিরাপত্তা।  

হিন্দু ধর্ম মতে, আজ দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা মর্ত্যলোক ছেড়ে স্বর্গশিখর কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে গেলেন। তবে আবারও ভক্তদের কাছে দিয়ে গেলেন আগামী বছর ফিরে আসার অঙ্গিকার।  

তাই আবারও মর্ত্যলোক ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় ভক্তরা চোখের জলে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানান। ফলে বিদায়ের মধ্যেও দেখা দিয়েছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। বিকেল থেকে মহানগরের মুন্নজান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের পদ্মায় প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া শুরু হয়। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, দেবী দুর্গা এবার ঘোড়ায় চড়ে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছিলেন, যার ফল হচ্ছে ফসল ও শস্যহানি। আর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ফিরবেন দোলায় (পালকি) চড়ে, যার ফল হচ্ছে মড়ক। অর্থাৎ পৃথিবীতে রোগশোক, মহামারির আশঙ্কা বাড়বে।

হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি তপন কুমার সেন জানান, রাজশাহীতে এবার মোট ৪৫৬টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ৭৫টি পূজামণ্ডপ ছিল রাজশাহী মহানগর এলাকায়। বাকি ৩৮১টি মণ্ডপ রাজশাহীর ৯ উপজেলায়। শুক্রবার দুপুর থেকে পর্যায়ক্রমে প্রতিমাগুলো বিসর্জন দেওয়া হয়। প্রতিমা বিসর্জনের সময় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক উদ্ধার তৎপরতার জন্য রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দলও উপস্থিত ছিল। ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এদিকে সন্ধ্যায় মহানগরের মুন্নজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পদ্মা নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন রাজশাহী সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিমা বিসর্জন দেখেন ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী মেট্রোপলিটনের পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল হামিদ সরকার, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ--খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষসহ হিন্দু ধর্মীয় নেতারা।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আরএমপি সদর দফতরের কন্ট্রোলরুম থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। উৎসব চলাকালে সাদা পোশাকেও অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য কাজ করেন। আর নির্বিঘ্নে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান শেষ করতে বিকেল থেকে মহানগরের কুমারপাড়া, আলুপট্টি, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। তবে কোথাও থেকে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২১
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।