কক্সবাজার: কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা সড়কের উত্তর পাশে রাতের আঁধারে আবারও অবৈধ স্থাপনা (মার্কেট) নির্মাণ করছে দখলবাজ চক্র। এ চক্রটি বাঁশ দিয়ে রাতারাতি অনেকগুলো দোকান নির্মাণ করে আদালতের নির্দেশনা সম্বলিত একটি সাইনবোর্ডও লাগিয়ে দেয়।
তবে বিষয়টি নজরে আসায় সোমবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলেই ওইসব অবৈধস্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একটি দল এ উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি দলের নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে এ চক্রটি সমুদ্র সৈকত এলাকায় সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ নানা অপকর্মে জড়িত রয়েছে। এসব দোকান বরাদ্দের নামেও এ চক্রটি ইতোমধ্যে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হাজী জসীম উদ্দিন ছিদ্দিকীর নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক শ্রমিক দিয়ে রাতারাতি এ মার্কেট নির্মাণ করা হয়। কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ বাংলানিউজকে বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সবচেয়ে বেশি পর্যটক সমাগম হয় সুগন্ধা বিচে। এসব দোকান-পাটের কারণে বিচে যাওয়ার রাস্তাটি ঘিঞ্জি সড়কে পরিণত হয়ে যায়। তাই গত বছর ওই স্থান থেকে দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছে।
কিন্তু রোববার (২৪ অক্টোবর) রাতের আঁধারে সেখানে দখলবাজ চক্রটি আবারও অবৈধভাবে ১৫-২০টি দোকান নির্মাণ করে। যা গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এ সময় কাউকে আটক করা যায়নি। তবে কারা দোকান নির্মাণ করছে খবর নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে মামলাও করা হবে।
প্রসঙ্গত, উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর কক্সবাজার সুগন্ধা পয়েন্টে ৫২টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) ও জেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানকালে দখলদারদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা করে কউক। বছর না পেরোতেই আবারও একই স্থানে দোকানপাট নির্মাণ শুরু করে চিহ্নিত চক্রটি।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে ৫২টি অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল নোটিশ দেয়। এরপর ব্যবসায়ীরা রিট করলে ২০১৮ সালের ১৬ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করে উচ্ছেদে স্থগিতাদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে ভূমি মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। পরে গত বছরের ১ অক্টোবর সমুদ্র সৈকতের কলাতলীর সুগন্ধা পয়েন্টে ৫২টি স্থাপনা উচ্ছেদে হাইকোর্টের দেওয়া রুল ও স্থগিতাদেশ খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। ফলে ওই ৫২টি স্থাপনা উচ্ছেদে কোনো বাধা না থাকায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে সুগন্ধা পয়েন্টের এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিল।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২১
এসবি/আরআইএস