ঢাকা: দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে ও অপরাধীদের চিহ্নিত করতে জেলা ও উপজেলা শহরের প্রতিটি বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার তথ্য থানায় দেওয়ার কার্যক্রম জোরদার করা হবে।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম ( বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে এ কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
হলি আর্টিজান ঘটনার পর শহরের প্রতিটি বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহ ও গাড়ির কালো গ্লাস কার্যক্রম শুরু হয়েছিল, সেটা এখন স্থগিত রয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এটা কতটুকু ভূমিকা রাখে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রবর্তন করেছিলাম প্রতিটি জেলা শহরের ভাড়াটিয়া হোক কিংবা বাড়ির মালিক হোক তাদের তথ্য থানায় থাকতে হবে। সেটা বন্ধ হয়ে যায়নি’ তবে ভাটা পড়েছে। আমাদের অনেক কাজ, অনেক কিছু সামনে আসায় এটা একটু স্লো হয়েছে। আমি পুলিশ বাহিনীকে বলবো এটা যেন আরও জোরদার করে। এটা থেকে আমরা সুফল পেয়েছি। জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে এই ডাটা ধরে অপরাধীদের শনাক্ত করতে ও ধরতে পেরেছি৷
তিনি বলেন, গাড়ির গ্লাস কালো রাখা যাবে না বলেছিলাম তখন, যখন অগ্নিসন্ত্রাস, জঙ্গি সন্ত্রাস ও মাঝে মাঝে দেখতাম ডাকাতির ঘটনা ঘটতেছে। তখন আমরা বলেছিলাম গাড়ির কালো গ্লাস সরিয়ে দিতে হবে। অনেক গাড়ির গ্লাস কোম্পানি থেকেই সেভাবেই আসছে। আমরা আবার চিন্তা করছি এ বিষয়টি ঠিক করতে। মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আধুনিক বিশ্বে যে ক্রাইম তা সাইবারে চলে গেছে, সেখানে মোকাবিলা করতেও পুলিশকে যুগোপযোগী করা হচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের পুলিশকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। আমরা মাদক তৈরি করি না। মাদকের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিজিবিকে শক্তিশালী করছি। আমাদের সমুদ্র সীমার নিরাপত্তাও জোরদার করা হচ্ছে। আনসার বাহিনীকে শক্তিশালী করছি। আমাদের সব বাহিনীকে যুগোপযোগী করে একটা পর্যায়ে যখন নিয়ে আসছি তখনই দেখি দেশে একটা নতুন সহিংসতার ঘটনা দেখছি। আগে জঙ্গির উত্থান দেখেছিলাম সে রকমই আরেকটা উত্থান ঘটাতে এ ধরনের অপচেষ্টা।
সুরক্ষা সেবায় পাসপোর্টে বৈপ্লিবক পরিবর্তন এনেছি উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এমআরপি করেছিলাম। এখন সেটা সবার হাতে। এরপর পাসপোর্টকে আরও আধুনিক করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী জার্মানির একটি কোম্পানির মাধ্যমে ই- পার্সপোর্টের কাজ চলছে। এশিয়ার অনেক দেশই এ উদ্যোগ নেয়নি।
কারাগারে আসামিদের অপরাধের ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আনসারকে আরও শক্তিশালী করা হবে। যাতে তারা পুলিশের সহযোগী হিসেবে ভিআইপি নিরাপত্তা দিতে পারে। আমাদের ক্যাপাসিটি বাড়াচ্ছি। কারাগারকে সুন্দর ব্যবস্থায় নিতে যাচ্ছি। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স গ্রহণ করেছি। আমরা এ বিষয় কঠোর অবস্থানে রয়েছি। আগে শুনতাম আগুন নিভে গেলে নাকি ফায়ার সার্ভিস আসে। এখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ফায়ার সার্ভিসকে আধুনিক করা হয়েছে। যে কোনো দুর্যোগে তারা দ্রুত সেবা দিতে পারে। যদিও ট্রাফিক জ্যাম একটা বাধা, সেক্ষেত্রে বিভিন্ন এলাকায় জোন করে দেওয়া হয়েছে। দেশের সব উপজেলায় এ গ্রেডের ফায়ার স্টেশন করা হয়েছে ।
তিনি বলেন, কোস্টগার্ডকে আরও আধুনিক করা হচ্ছে, আরও উন্নত জাহাজ, স্পিড বোট কেনা হবে। ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আমরা বর্ডার রোডগুলো সংস্কার করছি, ওয়াচ টাওয়ার হচ্ছে। রোহিঙ্গারা যাতে মাদক ব্যবসায় যুক্ত হতে না পারেরে সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাষাণ চরে নেওয়া হবে শিগগিরই।
বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
এসময় সংগঠনের যুগ্ন সম্পাদক মেহ্দী আজাদ মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন, অর্থ সম্পাদক মো. শফিইল্লাহ সুমন, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য ইসমাইল হোসাইন রাসেল, শাহজাহান মোল্লা, হাসিফ মাহমুদ শাহ, শাহাদাত হোসেন রাকিব উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬,২০২১
জিসিজি/এমএমজেড