সাভার (ঢাকা): জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে দেশে চলছে দ্বিতীয় দিনের ধর্মঘট। রাস্তায় গণপরিবহন না থাকায় সড়ক-মহাসড়ক এখন একদম ফাঁকা।
গণপরিবহন না থাকায় সাধারণ যাত্রীরা বাধ্য হয়েই রিকশায় চলাচল করেছেন। কেউ কেউ লেগুনা বা থ্রি হুইলারেও গন্তব্যে যাচ্ছেন। তবে রিকশার আধিক্যই বেশি। অন্যদিকে গণপরিবহন চলাচল না করায় যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। চালকরা দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া আদায় করছেন।
শনিবার (০৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগর, সাভার, রেডিও কলোনি ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের আশুলিয়ার নরশিংহপুর, জিরাবো, বাইপাইল, ইপিজেডের সামনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রিকশা চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে মহাসড়কে রিকশা উঠতে পারতো না। কিন্তু বর্তমানে ফাঁকা মহাসড়কে উঠে রিকশা চালানো যাচ্ছে। তা না হলে যাত্রীদের পায়ে হেঁটে যেতে হতো।
এদিকে পরিবহন ধর্মঘটের ভেতরেও সরকারি-বেসরকারি অফিস, গার্মেন্টস-কলকারখানা ও রফতানিমুখী সবকিছু খোলা থাকায় বিপাকে পরেছেন কর্মজীবীরা। কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল চলাচল করলেও সড়কে সবচেয়ে বেশি চলছে রিকশা।
সকালে পল্লী বিদ্যুৎ থেকে ডিইপিজেড যাবেন পোশাক শ্রমিক রোকেয়া। কিন্তু সড়কে নেমে দেখেন, শুধু রিকশা ও ভ্যান চলছে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, প্রতিদিন বাসে অফিসে যাই। বাসে গেলে আমার জন্য ভালো হয়। ভাড়াও কম, আর দ্রুত যাওয়া যায়। এখন বাস চলাচল না করায় বাধ্য হয়ে রিকশায় যেতে হচ্ছে। কিন্তু রিকশা ভাড়া তিনগুণ বেশি গুণতে হচ্ছে। আগে রিকশা ভাড়া ছিল ২০ টাকা। এখন ৬০ টাকায় যেতে হচ্ছে।
বাইপাইল থেকে আশুলিয়া বাজারে যাবেন সাত্তার মিয়া। তিনি একটি ব্যাংকে চাকরি করেন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, অন্যান্য সময় রিকশা ভাড়া নিত ৬০ থেকে ৮০ টাকা। শুক্রবার ১১০ টাকা ভাড়া দিয়ে গিয়েছি। আজ ১৫০ টাকার নিচে কোনো রিকশা পাইনি। বাধ্য হয়ে এই বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে। বাস চললে অল্প খরচে অফিস যাওয়া যায়।
তবে এ বিষয়ে খাইরুল ইসলাম নামে এক রিকশা চালক বাংলানিউজকে বলেন, ভাড়া তো একটু বেশি হবেই। আমরা ছাড়া তো যাত্রীদের উপায় নেই। আমরা একটু সুযোগ পেয়েছি। যাত্রীর অভাব নেই।
আরেক রিকশা চালক জসিম বলেন, ভোর থেকে রাস্তায় রিকশা চালাচ্ছি। সকালের দিকে পুলিশ কিছু রিকশায় রেকার দিয়েছে। আবার কিছু রিকশা উল্টে রেখেছে। আমার রিকশাও উল্টে রেখেছিল। দুই-তিন ঘণ্টা পরে ছেড়ে দিয়েছে। আমরা গরিব মানুষ। একদিন রিকশা না চালালে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
সাভার হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মহাসড়কে রিকশা চালাতে নিষেধ করেছি। কিন্তু কঠোর হতে পারিনি। কারণ সড়কে কোনো গাড়ি নেই। মানুষ কীভাবে চলাচল করবে? অসুস্থ রোগীরা কীভাবে যাবে? এ কারণে রিকশা চালকদের কিছু বলছি না। সব স্বাভাবিক হলে আবারও কঠোর অবস্থানে যাবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২১
এনএসআর